চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক মাঠে ব্যস্ত কৃষক
Published: 20th, January 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকেই বিজিবির পাহারায় মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে বিশ্বনাথপুর বাজারের শেষ মাথায় চেকপোস্ট বসিয়ে বহিরাগত ও উৎসুক জনতার সীমান্তমুখী ঢল বন্ধ করেছে বিজিবি।
এর আগে শনিবার বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা বিনোদপুর ইউনিয়ন এবং ভারতের শুখদেবপুর এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারতীয়দের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কৃষকরা জানান, পরিবেশ শান্ত হলেও শনিবারের ঘটনার কারণে উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, চৌকা সীমান্ত এলাকার মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। কেউ আলু তুলছেন, কেউবা তুলছেন মাষকলাই। আবার কেউ দিচ্ছেন সেচ। সবাই ব্যস্ত জমি আবাদ ও ফসল তোলার কাজে। শূন্য রেখায় টহলের পাশাপাশি ফসলের মাঠে বিভিন্ন ক্ষেতের মধ্যে বিজিবির পাহারা লক্ষ্য করা গেছে।
কালীগঞ্জ গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন বলেন, ক্ষেত দেখতে গিয়েছিলাম। আমার পাশের ক্ষেত গতকাল নষ্ট হয়েছে। তবে আমার ক্ষেত এখনও সুরক্ষিত আছে। আতঙ্কে আছি। বিজিবির পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে আর কোনো সমস্যা হবে না। আমরা শান্তিতে মাঠে কাজ করতে চাই। কোনো অশান্তি চাই না।
বিশ্বনাথপুর গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলেও আমরা আতঙ্ক নিয়েই মাঠে কাজ করছি।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন জানান, জনগণ ও বিজিবির প্রচেষ্টায় সীমান্ত পরিবেশ এখন পুরোপুরি শান্ত।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, সীমান্তে আমাদের দৈনন্দিন টহল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কৃষকরা মাঠে নির্বিঘ্নে কাজ করছেন। পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে, কৃষক ও স্থানীয়দের ফসলের মাঠ নষ্ট না করার স্বার্থে সীমান্ত এলাকায় না যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ ক জ করছ ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন যখনই হোক, প্রস্তুত থাকতে হবে: সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলে ইসি সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে। তখন নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে—যখনই হোক নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, আগে বলা হয়েছিল ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সেই সময়সীমা মাথায় রেখে ইসি প্রস্তুতি শুরু করেছিল। সেভাবে এগিয়েছিল। এখন আবার নতুন ‘ডাইমেনশন’ এসেছে। যৌথ বিবৃতির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যে ঘোষণাটা লন্ডনে বসে হয়েছে, এটা আপনারা যেটুকু জানেন, আমি এর বাইরে বেশি কিছু জানি না। আপনারা যেটুকু দেখেছেন মিডিয়াতে, আমিও সেটুকু দেখেছি।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে—এ সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমি এটা টেলিভিশনে দেখেছি, এটাকে আমি ফরমাল, অফিশিয়াল ভাবতে পারতেছি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো কথাবার্তা হয় নাই, কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসে। আমরা এখন আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবতেছি। যখনই হবে, যখনই হয় যাতে আমরা ইলেকশনটা “ডেলিভার” করতে পারি।’
সিইসি আরও বলেন, ‘এখন আমরা প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। যখন সরকারের সঙ্গে কথা হবে যে ওনারা কী আলোচনা করেছেন, আমরা তো নিশ্চয় ওনাদের ভাব বুঝতে পারব, বুঝে তখন একটা তারিখ, তখন সেটা করব। এখন আমাদের চিন্তা–ভাবনা, ধ্যান–ধারণা, শয়নে–স্বপনে নিজেদের প্রস্তুতি।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন—এটা এখনো তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ছয় মাস–আট মাস আগে ভোটের তারিখ বলার বিধান আইনে নেই।
সিইসি বলেন, যৌথ বিবৃতিতে তিনি যেটা দেখেছেন যে রমজানের আগেও নির্বাচন হতে পারে। সেখানে ‘যদি’ আছে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের জন্য বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো অনেকটা শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার নিবন্ধন, এটি মোটামুটি শেষ।
চলতি বছরের হালনাগাদে যাঁদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সে তালিকা চূড়ান্ত হবে আগামী বছরের ২ মার্চ। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তাঁরা ভোট দিতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত থাকতে হয়। সাধারণত ভোটের তারিখের মাস দুয়েক আগে তফসিল ঘোষণা করা হয়। যেদিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, তার আগে যাঁদের ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ইসি চেষ্টা করবে। এ জন্য আইনে কিছুটা পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে ইসি। সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে—এই ওয়াদা তিনি দিতে পারবেন না। তাঁরা যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন, যাতে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তাদের আস্থায় আনতে ইসি কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোও দেশের ভালো চায়। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তাদের অনেক ধরনের কথাবার্তা বলতে হয়। এগুলো তিনি রাজনৈতিকভাবে দেখেন।
সিইসি আরও বলেন, কেউ বিপক্ষে না থাকলে বুঝতে হবে কোনো ‘কোয়ালিটি’ নেই। বিপক্ষে কেউ বললে তখন শোধরানোর সুযোগ থাকে। এ জন্য কেউ বিরুদ্ধে বললে তিনি আহত হন না। তিনি এ ধরনের সমালোচনাকে স্বাগত জানান।