সিএনজি চালক হত্যার অভিযোগে ওসিসহ ৫ পুলিশের নামে মামলা
Published: 22nd, January 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এক সিএনজি চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলামসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন নিহতের মেয়ে।
অন্য চার আসামি হলেন এসআই কামাল হোসেন, এসআই মোস্তফা মিয়া, এএসআই নাহিদ হাসান ও কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম।
নিহত সিএনজি চালক ইয়াসিন মিয়ার (৪০) মেয়ে মরিয়ম আক্তার বাদী হয়ে গত রোববার কিশোরগঞ্জের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন।
বিচারক সুব্রত দাস পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো.
অভিযোগে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি রাতে কটিয়াদী থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য জালালপুর ইউনিয়নের চর জাকালিয়া গ্রামে লিটন মিয়ার বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালান। এসময় বাড়ির অন্যরা পালিয়ে গেলেও ইয়াসিন মিয়াকে পেয়ে পুলিশ তাকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে।
ইয়াসিন মিয়ার বাড়ি পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর বেলাবো এলাকায়। তিনি ওই গ্রামে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। ঘটনার সময় তিনি লিটন মিয়ার বাড়িতে আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ বলছে, ইয়াসিন মাদক কারবারি। পুলিশের অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে তিনি হৃদরোগে মারা গেছেন।
কটিয়াদী থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিহতের মেয়ে মরিয়ম আক্তার এইচএসসি পড়ছেন। তিনিও জেনেছেন, মরিয়ম মামলা করার পর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পিবিআইকে।
এদিকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ইতোমধ্যে ওসি ছাড়া অপর চার পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করেছেন বলে জানিয়েছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।