দখলবাজির অভিযোগে সোনারগাঁ যুবদল নেতা আশ্রাফ ভূইয়াকে বহিষ্কার
Published: 23rd, January 2025 GMT
দখলবাজির জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভূঁইয়াকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দখলবাজির জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভূঁইয়াকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়নের সিদ্ধান্তে এ বহিষ্কার কার্যকর করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ য বদল র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার ও দল কেউ দায় এড়াতে পারে না
রাজনৈতিক দল—ডান–বাম ও মধ্যপন্থী যা–ই হোক না কেন, সেটা পরিচালিত হয় নির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে। যাঁরা নিজেদের রাজনৈতিক দলের অনুসারী বলে দাবি করেন, তাঁদের সেই নীতি–আদর্শও ধারণ করতে হয়। কিন্তু সেই রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যখন সরাসরি চাঁদাবাজি, দখলবাজির অভিযোগ আসে, তখন তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় ছাপিয়ে চাঁদাবাজ-দখলবাজ পরিচয়ই মুখ্য হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরের চাঁদাবাজদের যে তালিকা তৈরি হয়েছে, তাতে রাজশাহী মহানগর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পরিচয়ধারী ১২৩ জন ‘চাঁদাবাজের’ নাম রয়েছে। এই তালিকায় বিএনপি, ছাত্রদল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, ক্যাডার, সমর্থক থেকে শুরু করে ৪৪ জনের নাম–পরিচয় আছে। একইভাবে পতিত আওয়ামী লীগের ২৫ জন এবং জামায়াতের ৬ জনের নাম আছে।
তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের থানাভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও রাজনৈতিক পরিচিতি উল্লেখ রয়েছে। কিছু ব্যক্তির মোবাইল নম্বরও আছে। এ ছাড়া কোন খাত থেকে চাঁদা তোলেন এবং বর্তমানে সক্রিয় কি না, সেই তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে এতে। তালিকায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ১২টি থানার মধ্যে ১০ থানা এলাকার তথ্য রয়েছে। তালিকাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
কেবল রাজশাহী নয়, দেশের প্রতিটি জেলায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি মহামারি আকার নিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে এসব ঘটনায় পতিত সরকারি দলের নেতা–কর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত। গণ–অভ্যুত্থানের পর সেই দলটির নেতা–কর্মীরা হয় আত্মগোপনে, নয় কারাগারে। তাহলে এসব চাঁদাবাজির ঘটনা কে বা কারা ঘটাচ্ছেন? একশ্রেণির পেশাদার চাঁদাবাজ আছে, যারা সব সরকারের আমলেই তাদের পেশাদারত্ব দেখিয়ে থাকে। রাজনৈতিক মামলার দোহাই দিয়ে আগের সরকারের আমলে কারাগারে আটক থাকা বেশ কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসীও জামিনে বেরিয়ে এসে নতুন করে অপকর্ম শুরু করেছেন।
আগে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এসব রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায় থাকা চাঁদাবাজেরা রং বদল করে ক্ষমতাসীন দলে ভিড়ে যেতেন। তাঁরা নিজেদের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য ভাবতে পছন্দ করতেন। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলটি এতটাই বিধ্বস্ত যে তাঁদের নেতা–কর্মীদের পক্ষে পোশাক বদল করে মাঠে থাকা অসম্ভব। ফলে তাঁদের শূন্যস্থান পূরণ করেছেন ভবিষ্যতে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রশ্রয় পাওয়া দলের নেতা–কর্মীরা।
যেসব রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাদের কেউ কেউ প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন দল থেকে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের অপকর্মের কারণে বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটছে। এ ক্ষেত্রে ‘বড় দল’ এগিয়ে থাকলেও ছোটরাও খুব পিছিয়ে নেই। রাজশাহীর তালিকায় তিনটি দলের নেতা–কর্মীদের নাম ছাপা হয়েছে। যেসব দলের নেতা–কর্মীদের নাম ছাপা হয়নি, তাঁরাও যে চাঁদাবাজি, দখলবাজি থেকে মুক্ত নন, সেটা হলফ করে বলা যায়। অতি সম্প্রতি একটি ছাত্রসংগঠনের নেতারা গুলশানের একজন সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়িতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বমাল ধরা পড়েন। এসব ঘটনা কোনোভাবে নতুন বন্দোবস্তের নমুনা নয়। জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করতে না পারুন, অন্তত চাঁদাবাজির মতো অপরাধ থেকে সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরত রাখুন।
কেবল রাজশাহী নয়, দেশের অন্যান্য স্থানে চাঁদাবাজির তালিকায় যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার আইনি ব্যবস্থা নেবে আশা করি। আর রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত অঘটন ঘটলে বহিষ্কারের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে অঘটনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। বিলম্বে হলেও তাদের বোধোদয় হোক।