রংপুরে টানা ৫ দিন দেখা নেই সূর্যের, বিপর্যস্ত জনজীবন
Published: 25th, January 2025 GMT
রংপুর অঞ্চলে টানা পাঁচ দিন ধরে দেখা নেই সূর্যের। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন প্রকৃতি। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।
গেল পাঁচ দিন ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আকাশে ভেসে থাকা ধোঁয়াশা ও সাথে হিম বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। তাপমাত্রা নামতে নামতে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে পৌঁছে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী মানুষ এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষত, কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল মানুষদের জীবনযাত্রায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।
আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাওয়া তথ্য মতে, রংপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এই পরিস্থিতির মূল কারণ। ভারী মেঘমালা এবং উত্তর থেকে আসা হিমেল বাতাসের কারণে সূর্যের আলো এই ক’দিন পুরোপুরি আড়ালে রয়েছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আকাশ আংশিক পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন অধিদপ্তরটি।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিনমজুররা। প্রতিদিনের কাজ বন্ধ থাকায় তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিকশাচালক আব্দুর রহমান বলেন, “ঘর থেকে বের হয়েও তেমন কাজ পাই না। ঠান্ডার কারণে মানুষ ঘরেই থাকছে।”
সামাজিক সংগঠনগুলো শীতার্ত মানুষের জন্য ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে। তবে এই সহায়তা পরিস্থিতি সামাল দিতে যথেষ্ট নয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি এবং শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা দরকার।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গেল এক সপ্তাহ ধরে রংপুরের আকাশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ সময় ঠান্ডায় মানুষের জীবনযাত্রা একেবারে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়া উন্নতি হয়ে সূর্যের দেখা মিলতে পারে।
ঢাকা/আমিরুল/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মামলা থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, ওসির অপসারণ চেয়ে ঝাড়ুমিছিল
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী শাহরিয়ার শিশিরের (২৪) ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের নামে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রতিবাদ এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জাহিদকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ুমিছিল হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে শতাধিক নারী–পুরুষ এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরে ঝাড়ু হাতে মিছিল নিয়ে থানার প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আহত শাহরিয়ার শিশিরের বাবা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান, সেতাবগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নওশাদ আলী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল কারীম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিয়াদ চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বোচাগঞ্জের মাটিতে একের পর এক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওসি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেন না। শিশিরের ওপর হামলাকারীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের অনুসারী। তাঁর হুকুমেই শিশিরের ওপরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে হামলার ঘটনায় আহত শিশিরের বাবা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম এজাহার থেকে বাদ দিতে বাধ্য করেন। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। বক্তারা এ সময় অবিলম্বে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদের অপসারণ ও কিশোর গ্যাংয়ের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
৯ জুন দুপুরে উপজেলার সুবিদহাট এলাকার সেতাবগঞ্জ চিনিকল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে শাহরিয়ার শিশির মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে শিশিরের বাবা বোচাগঞ্জ থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং সাত থেকে আটজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে একটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফয়সাল মোস্তাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে। উপজেলায় কোথায় কী ঘটছে, তার দায়ভার এসে পড়ছে আমার ওপরে। এখন মনে হচ্ছে এই এলাকায় জন্মগ্রহণ করাটাই আমার পাপ হয়েছে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জানতে চাইলে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদ বলেন, ৯ জুন শাহরিয়ার শিশির নামের এক ছেলেকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি সংশ্লিষ্ট আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এখানে নিজেদের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়েছে। সংক্ষুব্ধ হয়ে একটি পক্ষ এ ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে নয়, আইন চলে তার নিজস্ব গতিতে।