বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে তা বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন জুলাই আগস্ট বিপ্লবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বিলুপ্তের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়া জেলা স্কুল মাঠে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান সাহেদ ও ও শাহ সুলতান সজীব জানান, জুলাই-আগস্টে বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে শিক্ষার্থীরা জীবন বাজি রেখে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে চাঁদাবাজ, চিহ্নিত রাজনৈতিক নেতা ও বিতর্কিতদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া কমিটিতে রাখা হয়েছে। অথচ শত শত বুলেট শরীরে নিয়ে বেঁচে থাকা আহত অনেক আন্দোলনকারীকে এই কমিটিতে রাখা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে। 

তারা আরো জানান, জুলাই বিপ্লবে ১৯ জন শহীদের রক্তের বগুড়ায় তারা আবারো বঞ্চিত হয়েছেন। তারা ছাত্রলীগের মতো সিন্ডিকেট কমিটি চান না। কেন্দ্রীয় সব নেতাদের কাছে তাদের অনুরোধ, তেলবাজ কমিটি বিলুপ্ত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কলঙ্ক মুক্ত করে পুনরায় বগুড়ার সব ছাত্রদের সমন্বয়ে সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য কমিটি দেওয়ার। এ জন্য তারা আগামী ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে বর্তমান কমিটি বাতিল করার আহ্বান জানান। তা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা

সংবাদ সম্মেলনে বগুড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-আহব্বায়ক মুশফিকুর রহমান, শাহরিয়ার সিমান্ত, সংগঠক শাহ সুলতান, তৌকি তাহমিদ, বগুড়া জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান শাহেদ, আল তুরাগ হুসাইন ও মাহমুদুন্নবী মারুফ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে গত ২৯ জানুয়ারি ঘোষিত বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বগুড়া জেলার আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়া যুগ্ম-আহ্বায়ক সামিউল ইসলাম সৌধ, যুগ্ম-আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক শাহরিয়ার সিমান্ত, সংগঠক শাহ সুলতান নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ