যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দিনে ৭ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার
Published: 3rd, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণের পর থেকে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে, গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ দিনে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ৭ হাজার ৪১২ জন নথিবিহীন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।
আইসিই’র কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার জনকে বন্দীশালায় রাখা হয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, শিগগিরই তাদের নিজ নিজ দেশ কিংবা কিউবার গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হবে।
আরো পড়ুন:
এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে ফের বিমান দুর্ঘটনা
আইসিই’র তথ্য অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি, ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের শিকাগো এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের। গ্রেপ্তারদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি যৌন সহিংসতা, বন্দুক ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
আইসিই’র অনেক অভিযান অন্যান্য ফেডারেল সংস্থা যেমন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ); অ্যালকোহল, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যুরো (এটিএফ) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে।
ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ৭,৪১২ জনের মধ্যে বেশিরভাগেরই অপরাধমূলক কাজের বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটেছে, যখন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ নিশ্চিত করেছেন যে, ‘সবচেয়ে খারাপ’ অপরাধী অভিবাসীদের গুয়ানতানামো বে কারাগারে আটক রাখা হবে। গত শুক্রবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
তার আগে, গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণা বলেন, তিনি ৩০ হাজার ‘অপরাধী অবৈধ অভিবাসী’ আটক রাখার জন্য গুয়ানতানামো বে কারাগার সম্প্রসারণের জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দেবেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আজ আমি প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে ৩০ হাজার অভিবাসী আটক রাখার মতো নতুন স্থাপনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করছি। বেশিরভাগ মানুষই এটা সম্পর্কে জানেন না।”
পরে জানা যায়, ট্রাম্প এই বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ নয়, বরং প্রেসিডেন্টের একটি স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন।
তবে তার আগে, ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এরপর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইস ই অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]