রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পাবনার ঈশ্বরদী ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিপক্ষ ও দুর্বৃত্তদের হামলায় বিএনপির অন্তত ১৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই স্থানে প্রতিপক্ষের হামলা এবং এক স্থানে দুর্বৃত্তদের মারধরের শিকার হয়েছেন তারা।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীর হামলায় জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম সারোয়ারসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার পৌর শহরের মনিরামপুর বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরের দিকে গোলাম সারোয়ার ২০-৩০ জন নেতাকর্মী নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে যান। এ সময় আগে থেকে অবস্থান নেওয়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ড.

এম এ মুহিতের সমর্থকদের সঙ্গে কার্যালয়ে প্রবেশ নিয়ে তাদের বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে গোলাম সারোয়ারসহ তার কমী-সমর্থকদের ধাওয়া দেয় এবং মারধর করে তারা। এতে অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

তাৎক্ষণিক নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে গোলাম সারোয়ার অভিযোগ করে বলেন, এম এ মুহিতের সমর্থকরা লাঠিসোটা, হকিস্টিক, রড ও পাইপ নিয়ে তাদের মারধর করেছে। পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মুহিতের সমর্থক উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, শাহজাদপুরের রাজনীতিতে গোলাম সারোয়ারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। উপজেলা নেতাকর্মীর না জানিয়ে হঠাৎ দলীয় কার্যালয়ে আসায় তৃণমূলের নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে প্রতিহত করেছেন।

উপজেলা স্বেচ্ছসেবক দলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম চৌধুরী সাকিক বলেন, গোলাম সারোয়ার শাহজাদপুরে সক্রিয় না থাকলেও শনিবার হঠাৎ দলবল নিয়ে দলীয় কার্যালয় দখলের পাঁয়তারা করেন। বিষয়টি সাধারণ নেতাকর্মীরা মেনে নেননি।

উপজেলা স্বেচ্ছসেবক দলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ন কবির বলেন, গোলাম সারোয়ার ও তার পরিবার সুবিধাবাদী। দুঃসময়ে যারা দলের সঙ্গে ছিলেন না। তাদের নিয়ে হঠাৎ শাহজাদপুরে আগমন করার উদ্দেশ্য অন্য কিছু।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে কর্মী সমাবেশে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছেন গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়ালসহ তার অনুসারীরা। তাদের অভিযোগ, রাজশাহী-১ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শরীফ উদ্দীনের অনুসারীরা এ হামলা করেছে।

ভুক্তভোগী আবদুস সালাম শাওয়াল জানান, শনিবার বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে জিয়া ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনারুল সরকারকে সঙ্গে নিয়ে প্রাইভেটকারে সমাবেশে যাচ্ছিলেন। তারা বারো মাইল এলাকায় পৌঁছালে ১০ থেকে ১৫ জন লাঠিসোটা ও রোড নিয়ে হামলা করে।

এ সময় তারা গাড়িতে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে। এতে আবদুস সালাম মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশী শরীফ উদ্দিন বারবার তাদের ওপর হামলা করছেন। তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ করায় হামলা হতে পারে।

অভিযোগের বিষয়ে শরীফ উদ্দীন বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। সবাই তো আমার গ্রুপের। কে কার ওপর হামলা করল? খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, বিএনপি নেতার গাড়িতে হামলার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এর আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে।

ঈশ্বরদীর পাকশীতে আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৫) নামে বিএনপির এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার পাকশীর রূপপুর বিবিসি বাজারসংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত আরিফ পাকশী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নতুন রূপপুর গ্রামের বিএনপি নেতা আশরাফ আলীর ছেলে। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে বিবিসি বাজারের কাছে তাকে মারধর করে কয়েকজন। কী কারণে মারধর করা হয়েছে, তা তিনি বলতে পারেননি। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ প বন ব এনপ ম রধর ব এনপ র স ন ত কর ম হয় ছ ন কম ট র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন

সর্বস্তরের মানুষের অধিকার রক্ষা হয়, এমন বাংলাদেশ বিএনপি গড়ে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সৈয়দা আদিবা হোসেন। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম চায় দুর্নীতি বন্ধ হোক এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে উঠুক। জাতি চায় সত্যিকারের সংস্কার। সত্যিকারের সংস্কার হবে জনগণের মাধ্যমে।

আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের মুকামবাজার এলাকায় গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় সৈয়দা আদিবা হোসেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত সৈয়দ মকবুল হোসেন লিচু মিয়া এ আসনে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীর জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করেছেন। আমি তাঁর পথ অনুসরণ করে ধানের শীষের আদর্শে জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।’

সামাজিক, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জানিয়ে আদিবা হোসেন বলেন, ‘আমাদের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা উন্নয়নের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষা, যোগাযোগ, চিকিৎসা—সব দিক দিয়েই অনেক কাজ করতে হবে। আমরা একটা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সর্বস্তরের মানুষের নাগরিক অধিকার রক্ষা হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি সারা দেশে কাজ করছে।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সৈয়দা আদিবা হোসেনের প্রয়াত বাবা এই অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করেছেন। তাঁরই রাজনৈতিক উত্তরসূরি সৈয়দা আদিবা হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এখানকার গ্রাম, হাটে ঘুরে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখন দুই উপজেলার প্রতিটি ঘরে গিয়ে তিনি বিএনপির ৩১ দফার পক্ষে জনমত গড়ে তুলছেন। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত রাখতেও তিনি কাজ করছেন। জনবান্ধব এই নেত্রীকেই আগামী নির্বাচনে দল মনোনয়ন দেবে বলে কর্মী-সমর্থকেরা বিশ্বাস করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাদেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারেক জলিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলালুজ্জামান হেলাল, সহসভাপতি আবদুল কাদির সেলিম, আমুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুহেল আহমেদ, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাদেক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিলাদ আহমেদ, আলীনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন আহমেদ, লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন