স্টিল-অ্যালুমিনিয়ামে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের
Published: 11th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার থেকে এ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর চীনের শুল্কও কার্যকর হচ্ছে। চীনের সব ধরনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের গত গত ৪ ফেব্রুয়ারি বেইজিং এ ঘোষণা দিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দুই পরাশক্তির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ অনেকটাই স্পষ্ট হলো।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্ক সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। স্থানীয় সময় রোববার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তাঁর এ শুল্ক কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশসহ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার– সবার জন্য কার্যকর হবে। তিনি বলেন, যে কোনো স্টিল যুক্তরাষ্ট্রে এলে তার জন্য ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রেও এটা কার্যকর হবে। সম্প্রতি ট্রাম্প জানান, তিনি ইউরোপ, তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশকে শুল্কের আওতায় আনছেন। তাদের তামা, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, ওষুধপণ্য ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘শুল্কের ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই– আমরা শুল্ক আরোপ করব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পারস্পরিক শুল্ক। এটি এমনভাবে হবে, যেখানে একটি দেশ আমাদের ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের ওপর একই পরিমাণ শুল্ক বসাব। তাই এটি খুবই পারস্পরিক হবে। আমি মনে করি, এটা ন্যায্য পদ্ধতি। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তারা আমাদের ওপর শুল্ক বসালে, আমরাও নির্দিষ্ট হারে তাদের ওপর শুল্ক বসাব।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে কানাডা ও মেক্সিকোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প এ দুই দেশের ওপর শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত করেন। চীনের শুল্ক স্থগিত করা হয়নি।
বিশ্বের বড় দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ জোরদার হওয়া এবং আরও কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির মধ্যেই মার্কিন পণ্যে চীনের এ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়লা ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি।
এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বড় কোনো আঘাত আনবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনালাপ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এর আগে বেইজিং বলেছিল, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে কেউই লাভবান হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আসে মেক্সিকো ও কানাডা থেকে। নতুন এ শুল্ক আরোপ কার্যকর হওয়ায় এ দুটি দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কানাডা বলেছে, এ শুল্ক তাদের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসবে। অস্ট্রেলিয়া বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপে অনড় থাকলে হাজার হাজার মার্কিনি কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
বিবিসির লরা বিকার বলেন, প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে লড়াই করেছেন, বর্তমানে সেটি আর নেই। বেইজিং এরই মধ্যে অনেকটাই প্রস্তুতি নিয়েছে। এখন ২০১৭ সালের তুলনায় তারা রপ্তানির ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। এরই মধ্যে তারা গ্লোবাল সাউথ, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য বাড়িয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে বেইজিংয়ের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ককর শ ল ক আর প র শ শ ল ক আর প শ ল ক আর প ক র ওপর শ ল ক দ র ওপর ক র যকর
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।
বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।
প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সাড়ে চারটায় জামায়াতআজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলনজোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসআসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।
একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।
আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।