আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের চাকরি কোটাতে নয়: তথ্য উপদেষ্টা
Published: 11th, February 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়া হলেও তা কোনো কোটাতে যুক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফেসবুক পেজে তিনি এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।
সেখানে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই শহীদ পরিবারদের এককালীন টাকার পাশাপাশি মাসিক ভাতা ও চাকরির কথা বলা হয়েছে। চাকরিতে এটা কোনো নতুন কোটা হিসেবে যুক্ত হবে না। পরিবারের কর্মক্ষম কোনো একজন ব্যক্তিকে একবারের জন্যই যোগ্যতার বিচারে সরকারি-আধা সরকারি অথবা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য এটা বিবেচ্য হবে না।”
আহতদের সহয়তার বিষয়ে তিনি বলেন, “আহতদের ক্ষেত্রে যারা সারাজীবনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে (অন্ধ কিংবা অঙ্গহানী) এবং আর কখনো কর্মক্ষম হতে পারবে না তাঁদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরকম আহতদের একটা বড় অংশই তরুণ এবং বাকি জীবন তাঁদেরকে আন্দোলনের ক্ষত বয়েই বেড়াতে হবে, অনেককে দীর্ঘকাল চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।”
আহতদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে নাহিদ ইসলাম লেখেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও গুরুতর আহতদের পুনর্বাসন এবং এই পরিবারগুলোর ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা দেওয়াটা আমাদের অঙ্গীকার ছিলো এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বও বটে। কয়েক হাজার পরিবার অচল হয়ে গিয়েছে এই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের ফলে। তাঁদের এই ক্ষতি আমরা কোনোকিছু দিয়েই পূরণ করতে পারবো না। আর এই পরিবারগুলো যেকোনো সুযোগ সুবিধার চেয়ে কেবল সকলের থেকে সম্মান ও মর্যাদা চায়।”
এর আগে সোমবার সকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ২১টি শহীদ পরিবার ও আহত ৭ ব্যক্তির মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্য দিয়ে এই সহায়তা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জুলাই যোদ্ধারা দুটি মেডিকেল ক্যাটাগরি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ‘ক্যাটাগরি এ’ অনুযায়ী এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২০২৪-১৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি গুরুতর আহত প্রত্যেক জুলাই যোদ্ধা মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসাসুবিধা পাবেন। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাবেন। তাঁরা কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন–সুবিধা পাবেন।
‘ক্যাটাগরি বি’ অনুযায়ী, জুলাই যোদ্ধাদের এককালীন ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২০২৪-১৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অগ্রাধিকারভিত্তিতে সরকারি-আধা সরকারি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। তাঁরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে সরকার থেকে বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন।
এখন পর্যন্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে সরকার। এছাড়া, আহত ব্যক্তিদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। খুব শিগগির তালিকাটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট আহতদ র র জন য আহত ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে মন্দিরের দেয়াল চাপা পড়ে ৮ জনের মৃত্যু
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের বিশাখাপত্তনম জেলায় চন্দনোৎসবের অনুষ্ঠান চলাকালে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আট ভক্তের। মঙ্গলবার গভীর রাতে বিশাখাপত্তনমের প্রসিদ্ধ এক মন্দিরের ভিতরের দেওয়াল আচমকা ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে আট জনের মৃত্যু হয় এবং আহত হয় আরো বেশ কয়েক জন।
প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্তও ছিল ভক্তদের ভীড়। ওই সময় আচমকা মন্দিরের প্রায় ২০ ফুট উঁচু একটি দেয়াল ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান ভক্তদের অনেকেই। আহতদের তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আট জন প্রাণ হারান। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁদের। নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ এবং তিন জন মহিলা রয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো তিন জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
বুধবার সকালেও চলছে উদ্ধারকাজ। এখনো কেউ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দুই লাখ রুপি এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। শোকপ্রকাশ করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারপিছু ২৫ লাখ রুপি টাকা এবং আহতদের তিন লাখ রুপি আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে।
শাহেদ/সুচরিতা