চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মডার্ন ক্ল্যাসিক আজ
Published: 11th, February 2025 GMT
টানা চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজার লড়াইটা ফুটবলপ্রেমীদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। দু’দলের লড়াইকে অনেকেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মডার্ন ক্ল্যাসিকের মর্যাদাও দিচ্ছে। অনেকে আবার সময়ের সেরা দুই স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্লিং হালান্ডের লড়াই হিসেবেও দেখছে। ম্যানচেস্টারের ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আজ প্লে-অফ রাউন্ডের প্রথম লেগে মুখোমুখি হবে দু’দল।
ম্যানসিটির সময়টা এবার ভালো যাচ্ছে না। লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা বলতে গেলে শেষই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফে এসেছে ২২তম হয়ে। এর মধ্যে গত কিছু দিন ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যতম সেনানী আর্লিং হালান্ড। সিটির এ নওরোজিয়ান স্ট্রাইকার সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ আট ম্যাচে ৭ গোল করেছেন। রিয়ালের ভঙ্গুর রক্ষণের ফায়দা তোলার আশায় আছেন তিনি।
রিয়ালের রক্ষণের অন্যতম দুই ভরসা দানি কারভাহাল ও এডার মিলিতাও লম্বা সময় ধরে মাঠের বাইরে। অ্যান্টিনিও রুডিগার, ডেভিড আলাবা ও লুকাস ভাসকুয়েজ নতুন করে চোটে পড়েছেন। বর্ষীয়ান নাচো গত গ্রীষ্মে দল ছেড়েছেন। তাই সিটির বিপক্ষে ডিফেন্ডার সংকটে আছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। বাধ্য হয়ে মিডফিল্ডার চুয়েমেনিকে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলাতে হচ্ছে। যে কারণে প্রায়ই দলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। মাদ্রিদ ডার্বিতে এ জন্যই পয়েন্ট খোয়াতে হয়েছে। এ দুর্বলতার জন্য আক্রমণভাগে একসঙ্গে এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস, বেলিংহাম ও রদ্রিগোকে খেলাতে পারছেন না। সিটির বিপক্ষে রক্ষণের এ দুর্বলতাই আনচেলত্তির সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা।
খোঁড়াতে খোঁড়াতে নকআউটে আসা সিটির চিন্তা মাঝমাঠ নিয়ে। রদ্রির অভাব এখনও পূরণ করতে পারেনি তারা। তাঁর বিকল্প হিসেবেই কয়েক দিন আগে পোর্তো থেকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নিকো গঞ্জালেসকে কিনেছিলেন গার্দিওলা। কিন্তু তিনিও গত সপ্তাহে চোটে পড়েছেন। গঞ্জালেস নাকি দ্রুত ফিট হয়ে উঠছেন। দুই ডিফেন্ডার নাথান এইকে ও রুবেন দিয়াজ ফিট হয়ে গেছেন। তারা মাঠে নামতে পারলে রিয়ালে ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’কে (এমবাপ্পে, ভিনি, বেলিংহাম, রদ্রিগো) আটকানো সম্ভব বলে মনে করছেন গার্দিওলা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভোরে শুরু ক্লাব বিশ্বকাপ, বিশ্বের নজর এবার যুক্তরাষ্ট্রে
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ক্লাব পর্যায়ের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ এবার যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সময় রোববার (১৫ জুন) ভোরে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মাঠে গড়াচ্ছে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে অংশ নিচ্ছে ৬টি মহাদেশ থেকে বাছাই করা ৩২টি ক্লাব, খেলবে ১২টি আধুনিক ভেন্যুতে।
উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামবে আয়োজক দেশের ক্লাব ইন্টার মায়ামি। মেসির দলটির মুখোমুখি হবে আফ্রিকার অন্যতম সেরা ক্লাব মিশরের আল আহলি।
এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো— একই মঞ্চে ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা ও ওশেনিয়ার চ্যাম্পিয়ন ক্লাবগুলোর মুখোমুখি হওয়া। যেমন- ইউরোপ থেকে রয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ, পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখ, চেলসি, জুভেন্টাসসহ আরও বড় নাম। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে রয়েছে ফ্ল্যামেঙ্গো, পালমেইরাস, রিভার প্লেট, বোকা জুনিয়র্স। সবই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব।
আরো পড়ুন:
কোচ কাবরেরার পদত্যাগ দাবি, অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ
ঢাকায় সাফের মঞ্চে খেলবে না ভারত, আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ
এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছে সৌদির আল হিলাল, জাপানের উরওয়া, কাতারের আল আইন ও দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান এইচডি। আফ্রিকা থেকেও এসেছে শক্তিশালী দল যেমন- আল আহলি ও মামেলোদি সান্ডাউনস। ওশেনিয়া থেকে একমাত্র প্রতিনিধি অকল্যান্ড সিটি।
নতুন নিয়ম, আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া:
এবারের ক্লাব বিশ্বকাপ শুধু তারকাবহুল দল নিয়েই নয়, নতুন ফুটবল প্রযুক্তি ও নিয়মের জন্যও বিশেষভাবে আলোচিত।
বডি ক্যাম রেফারিং: মাঠের রেফারির ভিউ এবার সরাসরি দেখতে পারবে দর্শক—এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা।
ভিএআর সম্প্রচার: ভিএআর সিদ্ধান্ত এবার স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখা যাবে, রেফারির ব্যাখ্যাও পাবলিক অ্যাড্রেসে শোনা যাবে।
অটোমেটিক অফসাইড প্রযুক্তি: আধুনিক এআই নির্ভর প্রযুক্তি দিয়ে দ্রুত ও নির্ভুল অফসাইড সিদ্ধান্ত আসবে।
গোলরক্ষকের জন্য নতুন নিয়ম: বল ধরে ৮ সেকেন্ডের মধ্যে না ছাড়লে প্রতিপক্ষ পাবে কর্নার।
গ্রুপ ও নকআউট স্টেজের কাঠামো:
৮টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে ৩২টি দলকে। প্রতিটি গ্রুপে রয়েছে ৪টি করে দল। সিঙ্গেল রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে খেলবে প্রত্যেক দল। শীর্ষ দুই দল যাবে শেষ ষোলোতে। এরপর শুরু হবে নকআউট পর্ব। তবে এবারের আসরে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ রাখা হয়নি।
যারা নেই, তবু আলোচনায়:
যদিও বিশ্ব তারকা মেসি খেলছেন তবে অনুপস্থিতির তালিকাও দীর্ঘ। নেই মোহাম্মদ সালাহ। কারণ, লিভারপুল নেই প্রতিযোগিতায়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও নেই। যদিও ফিফা তাকে পেতে আগ্রহী ছিল। নেইমার চোট থেকে ফিরলেও খেলছেন না। ১৭ বছর বয়সী বিস্ময় লামিন ইয়ামালও বার্সার অনুপস্থিতিতে সুযোগ পাননি।
বিশ্ব ফুটবলে ক্লাব পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হিসেবে এত বড় মঞ্চ খুব কমই দেখা যায়। যেখানে মেসির ইন্টার মায়ামি থেকে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদের মতো জায়ান্টরা অংশ নিচ্ছে। সেখানে উত্তেজনা তো থাকবেই। আধুনিক প্রযুক্তি, অভাবনীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও নতুন নিয়মের সমন্বয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫ নিঃসন্দেহে হতে যাচ্ছে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
ঢাকা/আমিনুল