বিজিএমইএর প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ল চার মাস
Published: 11th, February 2025 GMT
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়াদ আরও চার মাস বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর ফলে আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত প্রশাসকের দায়িত্বে থাকছেন তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ গত সপ্তাহে বিজিএমইএর প্রশাসকের মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত অফিস আদেশ দিয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ২০ অক্টোবর চার মাসের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো.
প্রশাসকের মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু ও সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না, এমনটা জানিয়ে প্রশাসক মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুই শর্তে প্রশাসকের মেয়াদ চার মাস বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়।
শর্ত দুটি হচ্ছে—সংগঠনের সংঘস্মারক ও সংঘবিধি অনুসরণ করে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংগঠনটির সভাপতিসহ পর্ষদের অন্য সদস্যদের পদত্যাগের দাবি তোলেন ফোরাম নেতারা। ৭ আগস্ট পর্ষদের ওপর অনাস্থা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। ওই দিন সম্মিলিত পরিষদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের হট্টগোল হয়। গত বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে সংগঠনটির পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে ১৯ আগস্ট বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালককে চিঠি দেন ফোরাম নেতারা। এভাবে আড়াই মাসের টানাপোড়েন শেষে পর্ষদ ভেঙে ২০ অক্টোবর প্রশাসক বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিজিএমইএর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-২ শাখা আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, ২৪ আগস্ট এস এম মান্নান সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার পর পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও সেটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে পর্ষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মূলত এসব অভিযোগে পর্ষদ ভেঙে ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে প্রশাসক নিয়োগ করে মন্ত্রণালয়।
গত ১৫ বছরে একবার ছাড়া সব মেয়াদেই সম্মিলিত পরিষদ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছে। সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং আ.লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান। প্রভাবশালী এই জোট গত বছরের মার্চের নির্বাচনে সব কটি পদে বিজয়ী হয়। সভাপতি নির্বাচিত হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। যদিও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সংগঠনটির দেওয়া বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ডুজার সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান ছাত্রদলের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সরিয়ে নেওয়া, বিবৃতিতে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়নের মতো আচরণকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ডুজা।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে পাণ্ডুলিপিবিষয়ক কর্মশালা শুরু
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিইএ পরিচালকের সাক্ষাৎ
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে ‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন/ভাগ বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদকে ঘিরে একটি বিবৃতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু শব্দচয়ন করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে নিউজ করার পরেও দু’একটি গণমাধ্যমের উপর ছাত্রদলের প্রভাব খাটিয়ে সংবাদ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কেউ নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিকার চাইবেন। কিন্তু ছাত্রদলের এ ধরনের আচরণ আমাদের সে আকাঙ্ক্ষাকে আশাহত করেছে।
ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাগোনিউজ২৪.কম-এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে ‘সময়ের আলো’র স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ নামে একজন ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।
নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃক সাব্বির আহমেদের অপেশাদার ও অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী