খেলাফত মজলিসের সমাবেশ: ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আপনাকে মুখ সামলে কথা বলতে হবে’
Published: 12th, February 2025 GMT
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে তৌহিদি জনতা নিয়ে করা বক্তব্য প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে সংগঠনটির রাজশাহী জেলার আয়োজনে গণসমাবেশে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দলের আমির মামুনুল হক উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত সুশীলগিরি করবেন না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জালালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তৌহিদ মানে যারা এক আল্লাহকে বিশ্বাস করেন। যারা এক আল্লাহকে বিশ্বাস করেন, তাকে বলা হয় তৌহিদি জনতা। কিন্তু আজকে দুর্ভাগ্য বর্তমান সরকারের এক উপদেষ্টা যার নাম মাহফুজ আলম। গতকালকে তৌহিদি জনতাকে উগ্রবাদ বলে সম্বোধন করেছে। অর্থাৎ উনি গোটা মুসলমানকে উগ্রবাদ বলে সম্বোধন করেছেন। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আপনি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। আপনাকে মুখ সামলে কথা বলতে হবে। যদি বাংলাদেশের মুসলমান গর্জে ওঠে, আপনি পালাবার পথ পাবেন না। এ জন্যে আপনি মুখ সামলে কথা বলবেন। আপনি মুসলমানদের উগ্রবাদ বলবেন, এটা ৫ আগস্টের পর এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তাই পরিষ্কার বলি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় দেশের জনগণ আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
গত সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পক্ষে হলে মব করা বন্ধ করেন, আর যদি মব করেন, তাইলে আপনাদেরও ডেভিল (শয়তান) হিসেবে ট্রিট (গণ্য) করা হবে।’এর আগে গত সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পক্ষে হলে মব করা বন্ধ করেন, আর যদি মব করেন, তাইলে আপনাদেরও ডেভিল (শয়তান) হিসেবে ট্রিট (গণ্য) করা হবে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘তৌহিদি জনতা! আপনারা দেড় দশক পরে শান্তিতে ধর্ম ও সংস্কৃতি পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের আহাম্মকি কিংবা উগ্রতা আপনাদের সে শান্তি বিনষ্টের কারণ হতে যাচ্ছে। জুলুম করা থেকে বিরত থাকেন, নইলে আপনাদের ওপর জুলুম অবধারিত হবে। লা তাজলিমুনা ওলা তুজলামুনা—জুলুম করবেন না, জুলুমের শিকারও হবেন না। এটাই আপনাদের কাছে শেষ অনুরোধ!’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সতর্ক করে মামুনুল হক বলেন, ‘সুশীলগিরি ভালো। ইন্টেরিম গভার্মেন্টের বিতর্কিত উপদেষ্টাদের স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই। মাত্রাতিরিক্ত সুশীলগিরি করবেন না। মব জাস্টিসের কথা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন না। আমরা ২০১৩ সাল থেকে রাজপথে রক্ত দিয়ে আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের কোনো করুণার ভিখারি আমরা নই। যদি আমাদের করুণার পাত্র মনে করে থাকেন, ওপেন চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করলাম। আসুন, আমাদের মোকাবিলা করে দেখুন। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলি, এ দেশে আমরা ইসলামকে নিয়ে, ইসলামের গৌরব, জান্দা নিয়ে বাঁচব। ঐতিহাসিকভাবে বিগত আড়াই শ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে, বাংলাদেশ, বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও ইসলাম একসূত্রে গাঁথা। যদি বাংলাদেশের ইসলাম আক্রান্ত হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে। সুতরাং বাংলাদেশে যারা ইসলামবিরোধী, তারাই স্বাধীনতা বিপক্ষ শক্তি। যারা ইসলামকে সহ্য করতে পারে না, তারা স্বাধীনতার দুশমন। আমরা ছেড়ে দিয়ে কথা বলব না।’
আরও পড়ুন‘মবে’র মহড়া এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করব: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন দ র উপদ ষ ট করব ন ন আপন র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫