মেলায় সাজানো বিশালাকৃতির বাঘাইড়, চলছে বিক্রিও
Published: 12th, February 2025 GMT
চার বছর পর এবার বগুড়ার পোড়াদহ মাছের মেলায় প্রকাশ্যে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাঘাইড় মাছ আস্ত এবং কেটে বিক্রি করা হয়েছে।
চারশ’ বছরের পুরনো মেলার মূল আকর্ষণ বাঘাইড় মাছ। তাই পাল্লা দিয়ে প্রতি বছর মাছ ব্যবসায়ীরা মেলায় দুই মণ, আড়াই মণ ওজনের বাঘাইড় মাছ উঠাতেন। তবে বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিট বাঘাইড় মাছকে মহাবিপন্ন ঘোষণা করায় গত তিন বছর এই মাছ এভাবে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এবার মেলায় অন্তত ৫টি দোকানে বাঘাইড় মাছ বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখতে দেখা গেছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই মাছ বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
মেলায় ৬৫টি বাঘাইড় মাছ নিয়ে এসেছেন জমির উদ্দিন। বাঘাইড় ছাড়াও তিনি তার দোকানে উঠিয়েছেন আইড়, বোয়াল, চিতল, কাতল মাছ। তিনি জানান, ২০ বছর ধরে তিনি এই মেলায় মাছ নিয়ে আসেন। তিনি যে মাছগুলো নিয়ে এসেছেন, সবগুলোয় যমুনা নদীর মাছ। সব মিলিয়ে তিনি পাঁচ লাখ টাকার মাছ মেলায় নিয়ে এসেছেন। তবে এবার মেলায় মাছ কম।
আরো পড়ুন:
মেঘনায় ধরা পড়ল ৮ মণের শাপলাপাতা মাছ
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
হাওর পাড়ের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
তিনি জানান, ঝুঁকি নিয়ে বাঘাইড় মাছ মেলায় এনেছেন। বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, তিনি ধারণা করেছিলেন বাঘাইড় মাছ মেলায় বিক্রি করতে দেবেন কিন্তু নিয়ে আসার পর শুনছেন, বিক্রি করতে দেবেন না। তাই আপাতত দুটি মাছ উঠিয়েছেন। ৬৫টি বাঘাইড় মাছের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওজন ৩০ কেজি। সব চেয়ে ছোটটির ওজন ৫ কেজি। বেশির ভাগ বাঘাইড়ের ওজন ২০ কেজির কাছাকাছি। এই মাছগুলোর আকার ভেদে দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি।
বাঘাইড় মাছ নিয়ে আসা আরেক ব্যবসায়ী লাল মিয়া বলেন, যমুনার জেলেদের কাছ থেকে তিনি তিনটি বাঘাইড় মাছ নিয়ে আসেন। এর মধ্যে একটি ৩৫ কেজি ওজনের। সেটি বিক্রি করে ফেলেছেন। আরও দুটি আছে। দুটিই টাটকা মাছ। একটি তো এখনো জীবিত আছে। এটি ২০ কেজি ওজনের। যেটি বিক্রি করেছেন, সেটি ১৬০০ টাকা কেজি দরে ৫৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। বাকি দুটিরও দরদাম চলছে। ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি ধরে ছেড়ে দেবেন।
প্রথা অনুযায়ী মাঘের শেষ বুধবারে ইছামতী নদীর পাড়ে এ মেলা বসে। মেলাটি সন্যাস মেলা, মাছের মেলা নামেও পরিচিত। তবে হাল আমলে এসে মেলাটি জামাই মেলা নামে বেশি পরিচিত। যে কারণে প্রথা অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে সবচেয়ে বড় মাছ কিনে নিয়ে যেতে জামাইদের নীরব প্রতিযোগিতা চলে।
মেলায় মহাবিপন্ন বাঘাইড় মাছ বিক্রি এবার শিথিল করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমান বলেন, ‘‘আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তো কাজ করছে। আর বিক্রি শিথিল বা কঠিন, এটা আসলে কার এখতিয়ার বা কে করবে এটা আমি জানি না। তবে আমি আইন মোতাবেক কাজ করছি।’’
ঢাকা/এনাম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে হত্যায় সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে: নেতানিয়াহু
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার আশঙ্কার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানি শীর্ষ নেতার হত্যায় ‘সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে’।
তিনি বলেন, ‘ইরানি নেতার হত্যার সম্ভাব্য পরিকল্পনা ইরান ও ইসরায়েল মধ্যকার চলমান সংঘাতকে ‘আরও বাড়িয়ে তুলবে না, বরং সংঘাতের অবসান ঘটাবে’।
এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, খামেনিকে হত্যার লক্ষ্যবস্তু করার চিন্তা আছে কিনা। প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ইরান ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চায় এবং ইসরায়েলে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল এই আগ্রাসন ঠেকাচ্ছে। এটা ঠেকাতে হলে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে। আমরা যা প্রয়োজন, তাই করছি।
ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েল বিজয় অর্জন করতে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার ইসরায়েলি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিজয় অর্জনের পথে। এর আগে, তেহরানের আকাশ ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন’ করার দাবি করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী কর্মকর্তারা। সেইসঙ্গে, ইরানের মিসাইল লঞ্চার বা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ যন্ত্রের ‘এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস'’করে দেওয়ারও দাবি করেন তারা।
সেই দাবিই পুনর্ব্যক্ত করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের দু'টি লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। পারমাণবিক হুমকি নির্মূল এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নির্মূল করা।
ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদেরকে ইরান হামলার লক্ষ্যবস্তুে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু। বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় সেখানে উপস্থিত সেনাদের উদ্দেশে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ধন্যবাদ। সৃষ্টিকর্তার সাহায্যে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো এবং সফল হব। বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত আমরা (যুদ্ধ) চালিয়ে যাব।’