আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি হেফাজতে ইসলামের
Published: 14th, February 2025 GMT
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, “জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের দীর্ঘ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো তথ্য-প্রমাণসহ উঠে এসেছে। হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশে তার আজ্ঞাবাহী বাহিনীর সদস্যরা গুম-খুন ও নির্যাতনে নৃশংসতার সমস্ত সীমা ছাড়িয়েছে।”
হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা বলেন, “পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, ৫ মে ও ২০২৪-এর গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তা নাহলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ একদণ্ডও শান্তিতে থাকতে দেবে না এ দেশের সরকার ও জনগণকে। তারা একের পর এক স্যাবোট্যাজ ঘটিয়ে ছাত্রনেতৃত্ব ও তৌহিদি জনতাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কালচারাল ঘরানার ফ্যাসিবাদপন্থী আওয়ামী লোকজন আবারো মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। গণঅভ্যুত্থানের পক্ষগুলোর মধ্যে তারা বিভেদ-বিভক্তি ছড়িয়ে দিতে তৎপর।”
ভারত এখনো শত্রুরাষ্ট্রের মতো আচরণ করছে, অভিযোগ করে হেফাজতের নেতারা বলেন,“হাসিনা-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে এখনো তারা মেনে নিতে পারছে না, বরং তাদের আশ্রয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে একের পর এক ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে। তাই, গুম-খুন ও গণহত্যার দায়ে হাসিনার বিচারকাজ ত্বরান্বিত করতে হবে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বাহিনীতে তার অনুগত ও চিহ্নিত দোসরদেরও দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব সুরক্ষিত হবে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।