রাজধানীর ইসলামবাগের কামালবাগে গতকাল শনিবার বিকেলে প্লাস্টিক ও পলিথিন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট সোয়া ১ ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

স্থানীয়রা জানান, দোতলা টিনশেডের নিচতলায় একাধিক কারখানা এবং দোতলায় লোকজন বাস করত। বিকাল ৩টা ১৭ মিনিটে আগুন লাগার পর প্রচণ্ড ধোঁয়া বের হয়। আশপাশের ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে নিরাপদে অবস্থান নেন। কারখানায় বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকদ্রব্য ছিল।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, খবর পেয়ে তাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৩টা ২৫ মিনিটে। মোট আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পলাশী ও হাজারীবাগ ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট একসঙ্গে পাঠানো হয়। এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগা ভবনের নিচতলায় প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারখানা ছিল। আশপাশে আছে আবাসিক ভবন। আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি বলেন, কেউ বলছে কারখানা থেকে, কেউ বলছে আবাসিক ভবন থেকে আগুন লেগেছে। আসলে তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। 
এদিকে ইসলামবাগের পর রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একুশে টিভি (ইটিভি) ভবনের নিচ তলায় পেয়ালা রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রাত ৮টা ২০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাতের পর পুরো ভবন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় ইটিভিতে থাকা লোকজন আতঙ্কে ছাদে ওঠে।

ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, ইটিভি ভবনের নিচ তলার পেয়ালা কফি হাউজে আগুন লাগে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পৌনে ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ৮টা ৫৫ মিনিটে পুরোপুরি নির্বাপণ করা হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। আগুনের সূত্রপাতের কারণ প্রাথমিকভাবে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভবন র ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ