৩ দিন বিদ্যুৎহীন মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
Published: 20th, October 2025 GMT
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টানা তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা রোগী এবং চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফ্রিজে থাকা হিমায়িত ওষুধ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ট্রান্সমিটার নষ্ট হওয়ায় গত ১৭ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। পানি না থাকায় দুর্ভোগ আরো বেশি বেড়েছে। বিশেষ করে টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ায় সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্ভোগের শিকার হয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে রোগী নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করছেন।
আরো পড়ুন:
ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিকে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতনে গর্ভপাতের অভিযোগ
মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মায়ের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সুমি আক্তার। সোমবার (২০ অক্টোবর) তিনি বলেন, “তিন দিন ধরে কারেন্ট নেই। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গরম ও কারেন্ট না থাকায় মায়ের চিকিৎসা হচ্ছে না। গরমে মা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে আজ মাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।”
একই অভিযোগ করলেন উপজেলা সদর থেকে রোগী নিয়ে আসা আহসান হোসেন। তিনি বলেন, “হাসপাতালে আসছিলাম সেবা নিতে, এখন দেখি গরমে জীবন যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে কারেন্ট নেই। এ অবস্থায় হাসপাতালে রোগী রাখা যায়?”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক নার্স বলেন, “আমরা তো নিজেরাই ভয় পাচ্ছি। রোগী যদি অক্সিজেন সাপোর্টে যায়, আমরা কিছুই করতে পারব না। জরুরি যন্ত্রপাতিগুলো একটার পর একটা অচল হয়ে যাচ্ছে।”
মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান মাহমুদ বলেন, “হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহের যে ট্রান্সমিটার রয়েছে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হয়েছে। জেনারেটর সচল রাখার চেষ্টা চলছে। আশা করছি, দ্রুত ট্রান্সমিটার ঠিক করা হবে।”
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন উদ্যোক্তারা: জিইডির প্রতিবেদন
নতুন ব্যবসা চালু করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন বহু উদ্যোক্তা। সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সর্বশেষ মাসিক অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
জিইডির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচন যদি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক গতিপথ ঠিক করে এবং নতুন সরকার এসে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করা, আর্থিক ও ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা, জ্বালানি নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ অব্যাহত রাখে, তাহলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ফিরে পাবে।
জিইডির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় অর্থনীতি নিয়ে সতর্ক আশাবাদ দেখিয়েছে জিইডি। জিইডি বলছে, একদিকে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে স্থায়ী মূল্যস্ফীতি, ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাস ও দুর্বল ব্যাংকিং খাত স্থানীয় চাহিদা ও বেসরকারি বিনিয়োগকে সীমিত করতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ভালো অবস্থায়
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আগের তুলনায় ভালো হয়েছে বলে মনে করছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এ ছাড়া প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক প্রবাহ বেড়েছে, যা দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অবস্থান ভালো হওয়ার বড় কারণ।
জিইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে চলতি বছরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বা বহির্বাণিজ্যের সূচকে অস্থিরতা ছিল। রপ্তানি আয়ের সূচকও ওঠানামা করেছে। বিশেষ করে ২০২৫ সালের এপ্রিল ও জুনে রপ্তানি আয়ে পতন দেখা যায়। তবে অক্টোবরে এই সূচকের অবস্থানে উন্নতি দেখা যায়। তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানির সূচকে বছরের অর্ধেক সময় পর্যন্ত ধীরগতি দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে উন্নতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৫ সালের অক্টোবরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে। এর কারণ খাদ্যের দাম স্থিতিশীল হচ্ছে ও সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ সরবরাহের শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা ও আমদানি করা পণ্যের চাপ কম থাকায় চলতি বছরের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমার বড় কারণ হচ্ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবরে ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।
মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ৪৭ শতাংশ
খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে চাল। জিইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ছিল ৪৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় সামান্য কম। আর মাছ ও মাংসের ভূমিকা ছিল যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে পর্যাপ্ত মৌসুমি সরবরাহ ভালো থাকায় সবজির দাম কম ছিল। তাই সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে সবজি।