ওয়াসা গত এক যুগে ঋণের টাকায় একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কোনোটিই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। ব্যয় বেড়েছে কয়েক দফা। এখন পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে ঋণের টাকায় আরও দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে ২০১৮ সালে নেওয়া পয়োনিষ্কাশনের প্রথম প্রকল্পটিও নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরও শেষ হয়নি। ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে ওই প্রকল্পেরও।

চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া গত বছরের ২৫ নভেম্বর একনেকের আরেক সভায় অনুমোদন পায় দ্বিতীয় প্রকল্পটি। এটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। এ দুই প্রকল্পে সরকারি-বেসরকারি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ১০০ টাকা।

চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনে মহাপরিকল্পনা তৈরি করেছে। সে অনুযায়ী পুরো শহরকে ছয়টি অঞ্চল বা ক্যাচমেন্টে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো হালিশহর, কালুরঘাট, ফতেয়াবাদ, পূর্ব বাকলিয়া, উত্তর কাট্টলী ও পতেঙ্গা। ইতিমধ্যে হালিশহর ক্যাচমেন্টের জন্য একটি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। নতুন করে অনুমোদন পাওয়া দুই প্রকল্পে কালুরঘাট, বাকলিয়া ও উত্তর কাট্টলী ক্যাচমেন্টের কাজ হবে। অর্থাৎ মোট চারটি ক্যাচমেন্টের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়াসা আগে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্প শেষ করতে পারেনি। ফলে নতুন দুই প্রকল্প ঘিরেও একই শঙ্কা রয়েছে। সরকারকে ওয়াসার কার্যক্রম নিয়মিত তদারক করতে হবে।

নথি অনুযায়ী, গত এক যুগে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা গড়ে তুলতে ১০টি বড় প্রকল্প নিয়েছে ওয়াসা। আট প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। দুটি প্রকল্পের কাজ এখনো চলছে। শেষ হওয়া আট প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। আর চলমান দুই প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। 

জানতে চাইলে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, এবারের প্রকল্প দুটি নির্ধারিত মেয়াদেই শেষ হবে। আগে করোনা, জলাবদ্ধতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ঠিক সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার নির্ধারিত মেয়াদেই কাজ শেষ করার বিষয়ে তাঁরা আশাবাদী।

 

প্রথমটা ধুঁকছে

পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার প্রথম প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৮ সালে। ওই বছরের ৭ নভেম্বর একনেক সভায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা স্থাপন’ শীর্ষক প্রথম প্রকল্প অনুমোদন পায়। এই প্রকল্পে শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালে। সেটি হয়নি। বর্তমানে প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পের কাজ ঠিক সময়ে শুরু করা যায়নি। করোনার সময় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেভি অব এরিনকোর কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ায় চলে যান। এ ছাড়া নকশার মধ্যে নতুন স্থাপনা যুক্ত করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে কাজটি নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয়নি। তবে বর্তমানে ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুনে। মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, বাজেটের ঘাটতির কারণে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। চলতি অর্থবছরে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন ছিল, তা পাওয়া যায়নি।

ওয়াসা সূত্র জানায়, একনেকে অনুমোদনের প্রায় এক বছর পর ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বরে প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০২০ সালের অক্টোবরে। এ ছাড়া ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ার তাইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মাসেই, অর্থাৎ অনুমোদনের প্রায় তিন বছর পর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ফলে ডিপিপিতে কাজ শুরু ও শেষ করার যে সূচি ধরা হয়েছিল, তা অনুসরণ করতে পারেনি ওয়াসা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র ক জ দ ই প রকল প ব যবস থ শ ষ কর শ ষ হয় প রথম একন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ভক্তের কাছ থেকে পাওয়া ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি কী করেছেন সঞ্জয় দত্ত

বলিউড তারকা সঞ্জয় দত্তের জীবনে চমকপ্রদ ঘটনার অভাব নেই। কিন্তু এবার যা ঘটেছে, তা যেন রীতিমতো সিনেমার চিত্রনাট্য! এক ভক্ত তাঁর জন্য রেখে গিয়েছিলেন ৭২ কোটি রুপির (প্রায় ১০০ কোটি টাকা) সম্পত্তি। আর সঞ্জয় দত্ত? অবাক করে দিয়ে সবই ফিরিয়ে দিয়েছেন সেই ভক্তের পরিবারকে।

সম্প্রতি কার্লি টেলসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত নিশ্চিত করেছেন ২০১৮ সালের সেই বহুল আলোচিত ঘটনার কথা। তিনি বলেন, ‘আমি ওটা ওর পরিবারকে ফেরত দিয়ে দিয়েছি।’ ওই ভক্ত নিশা পাটিল, ছিলেন মুম্বাইয়ের এক গৃহিণী। জানা যায়, মৃত্যুর আগে তিনি নিজের সম্পত্তি সঞ্জয় দত্তের নামে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্যাংককে। তাঁর মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে।

সে সময় খবরটি শোরগোল ফেলে দিয়েছিল ভারতজুড়ে। একজন তারকার জন্য এমন আবেগঘন সম্পত্তি হস্তান্তর যেমন বিরল, তেমনি সঞ্জয়ের তা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও প্রশংসিত হচ্ছে। বহু বছর পর আবার আলোচনায় উঠে এল এ ঘটনা এবার অভিনেতার নিজ মুখেই।

সঞ্জয় দত্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভক্তের কাছ থেকে পাওয়া ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি কী করেছেন সঞ্জয় দত্ত