‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ অ্যাপের পরিসর আরও বাড়াল মেটলাইফ
Published: 17th, February 2025 GMT
এত দিন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ অ্যাপের মাধ্যমে মানুষকে স্বাস্থ্য ও আর্থিক সেবা দিত মেটলাইফ বাংলাদেশ। এখন অ্যাপটির পরিসর আরও বড় করেছে কোম্পানিটি। এর ফলে অ্যান্ড্রয়েডের পাশাপাশি এখন আইওএস ও ওয়েব পোর্টালেও অ্যাপটির সেবা নেওয়া যাবে।
আজ সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে মেটলাইফের প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এ সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেটলাইফ এশিয়ার প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সঞ্জীব কাপুর ও মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ প্রমুখ।
মেটলাইফ জানিয়েছে, বর্তমানে আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড ও ওয়েব—এই তিন ডিজিটাল মাধ্যমেই ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ পরিষেবাটি পাওয়া যাবে। ফলে ইন্টারনেট সংযুক্ত রয়েছে এমন যেকোনো স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটার ব্যবহারকারী ব্যক্তি আরও সহজে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও আর্থিক সুরক্ষা পাবেন। ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ অ্যাপটি একসময় থ্রিসিক্সটি হেলথ অ্যাপ নামে পরিচিত ছিল।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ অ্যাপটি প্লে স্টোর থেকে ইতিমধ্যে ১৩ লাখের বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। অ্যাপটি যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ফলে ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ একাধিক প্ল্যাটফর্মে চলে আসায় এর মাধ্যমে আরও বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছানো যাবে।
ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপের মাধ্যমে দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা বিনা মূল্যে টেলি-ডাক্তারের পরামর্শ, অনলাইনে ওষুধ কেনা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং, বিভিন্ন ছাড়ের সুবিধা, ফ্রি হেলথ অ্যাসেসমেন্ট (যেমন বিএমআই ক্যালকুলেটর, কার্ডিও বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি নিরূপণ) সুবিধা নিতে পারবেন। এই সেবা মেটলাইফের গ্রাহক না হলেও নেওয়া যাবে। পাশাপাশি থাকবে আর্থিক অগ্রাধিকার বিশ্লেষণ করার সুযোগ। এ ছাড়া সেবাটির মাধ্যমে মেটলাইফের উপযুক্ত আর্থিক সুরক্ষা সমাধানও বাছাই করে নিতে পারবেন গ্রাহকেরা।
মেটলাইফের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে জটিল রোগ ও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার হার বেড়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়ও ক্রমে বাড়ছে। ফলে মানসম্মত চিকিৎসাসেবার সহজলভ্যতা এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবাকে সহজ ও সাশ্রয়ী করার মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রায় বাস্তবিক পরিবর্তন আনতে ‘ওয়ান বাই মেটলাইফ’ অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মেটলাইফ এশিয়ার প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সঞ্জীব কাপুর বলেন, বাংলাদেশ মেটলাইফের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজার। মেটলাইফ সর্বোচ্চ মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে স্বাস্থ্য ও আর্থিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিতে সহায়তা করছে। দেশের ডিজিটাল মাধ্যমগুলো মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ও আর্থিক সেবার সুযোগ সম্প্রসারিত করছে। এ কারণে “ওয়ান বাই মেটলাইফ” সেবা এখন দেশের আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বিমা খাতকে সহযোগিতা করতে আমরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধানের খাতগুলোয় বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। “ওয়ান বাই মেটলাইফ” অ্যাপটি সেই প্রতিশ্রুতির উদাহরণ। এই সেবা মানুষকে আরও সুস্থ ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে সহায়তা করছে।’
বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি ব্যক্তি ও ৯ শতাধিক করপোরেট গ্রাহককে বিমা সেবা দিচ্ছে মেটলাইফ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ও আর থ ক আর থ ক স ব যবহ র আরও ব
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। আজ (সোমবার) তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশে বিগ টেক জায়ান্ট আসার যাত্রাটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরেই শুরু হলো। এভাবে আসবে আরও অনেকেই।
চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একই পোস্টে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, আজ আমরা চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসেছি। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।
অসাইরিস গ্রুপও বাংলাদেশে আসছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার হবে বাংলাদেশি ডাটা ও ক্লাউড কোম্পানি যাত্রার হাত ধরে। এখানে হচ্ছে বিগ জায়ান্টদের জন্য বিশ্বমানের সিকিউরড ক্লাউড সে-আপ, যেখানে আসতে পারে মেটা, গুগলের পেলোড। এমন অভাবনীয় সব উপহার বাংলাদেশকে দিতে চলছেন অধ্যাপক ইউনূস।
কী ব্যবসা করে টেনসেন্ট
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য মতে, চীনের শেনজেনভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। টেনসেন্ট নিজেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তারা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ভিডিও গেমসহ অন্যান্য উচ্চমানের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে।
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকদের ডিজিটাল রূপান্তর ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য তারা ক্লাউড কম্পিউটিং, বিজ্ঞাপন, ফিনটেক ও অন্যান্য এন্টারপ্রাইজ সেবা দিয়ে থাকে। চীনের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানকারী অ্যাপ (ম্যাসেজিং অ্যাপ) উইচ্যাটের মালিক টেনসেন্ট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়েও কাজ করে কোম্পানিটি।
টেনসেন্ট ২০০৪ সাল থেকে হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফরচুন সাময়িকীর ২০২৪ সালের ‘ফরচুন গ্লোবাল ৫০০’ কোম্পানির তালিকায় টেনসেন্টের অবস্থান ছিল ১৪১তম।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বের গেমশিল্পের বাজার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা সমন্বিতভাবে সংগীত ও সিনেমাশিল্পের থেকেও বেশি। এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও গেমশিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই শিল্পের বিকাশ হলে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আর তাই বাংলাদেশের গেমশিল্প ও ডিজিটাল খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট।
২০২১ সালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সে সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের ভিডিও গেমশিল্পের বাজার নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে শিল্পের সঙ্গে জড়িত দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা তখন বলছিলেন, এ বাজার ৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪২৮ কোটি টাকার মতো হবে।