দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পোলট্রি মেলা শুরু আজ
Published: 20th, February 2025 GMT
ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলা। এদিন বিকেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ মেলার উদ্বোধন করবেন। মেলা শেষ হবে আগামী শনিবার।
ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা ও বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এই মেলার আয়োজন করেছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় পোলট্রি মেলা (১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো) বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
‘সাসটেইনেবল পোলট্রি ফর এমার্জিং বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই মেলায় ১৮টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি ও সেবা নিয়ে মেলায় উপস্থিত হবে। থাকবে ৮২৫টি স্টল। ফিডমিল, হ্যাচারি, ব্রিডারফার্ম, কমার্শিয়াল ফার্ম, রিসাইক্লিংসহ পোলট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের দেখা মিলবে এ মেলায়। এ মেলার ফলে পোলট্রি খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। মেলায় যাওয়ার জন্য ফ্রি শাটল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কুড়িল ৩০০ ফিট থেকে সারাদিনই চলবে শাটল বাস। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নতুন বিনিয়োগ ও তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা পূরণে এই মেলা সহায়ক হবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।
ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, ২০৫০ সালকে সামনে রেখে দেশীয় পোলট্রি শিল্প একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। পোলট্রি শিল্প অসংখ্য বেকারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। আগামী ১০ বছরে এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পোলট্রি শিল্প মূলত গ্রামাঞ্চলে গড়ে উঠেছে, ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে।
মসিউর বলেন, স্বল্পতম সময়ে মানসম্মত প্রোটিন উৎপাদন করতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত, খামার ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন এবং গবেষণা কাজে ব্যয় বাড়াতে হবে। এ জন্য সরকারকে পোলট্রি শিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।