ইসলামী মাহফিলে বিএনপি নেতাকে প্রধান অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ ঘোষণা করেছে আয়োজকরা। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়।

শুক্রবার উপজেলার খোশারপাড় নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রা‌সায় তাফসীরুল কুরআন মাহফিল হওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় বিএনপি নেতাকে প্রধান অতিথি করায় ওই মাহফিল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

জানা যায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা আহ্বায়ক নজির আহমেদ ভুঁইয়াকে প্রধান অতিথি করায় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার সমর্থক গাজী জাফর, গাজী জয়নাল আবেদীন, গাজী নজির ও ফয়েজ আহমেদ মাহফিলে বাধা দেন।

অন্যদিকে প্রধান অতিথিকে বাদ দিয়ে মাহফিল করলে তার অসম্মান হবে দাবি করে তা বন্ধ ঘোষণা করেন আয়োজকরা।

এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে স্থানীয় মহলে। মাহফিল বন্ধের নিন্দা জানিয়ে খোশারপাড় নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রা‌সার শিক্ষক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া মিলন, প্রধান পৃষ্ঠপোষক আব্দুল্লাহ আল নয়ন, ক্যাশিয়ার বিল্লাল হোসেন মুকুল বলেন, নজির আহমেদ ভূঁইয়াকে প্রধান অতিথি করায় সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভুঁইয়ার কর্মী গাজী জাফর, গাজী জয়নাল আবেদীন, গাজী নজির ও ফয়েজ আহম্মেদ তাফসির মাহফিলে বাধা দেন। এতে সংঘর্ষের আশংকায় আমরা গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে মাহফিল বন্ধ ঘোষণা করি।

এব্যাপারে গাজী জাফর বলেন, আমি আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার রাজনীতি করি। আমরা মাহফিলে বাধা প্রদান করিনি, আমরা বলেছি যেহেতু আমার নেতৃত্বে গ্রামে বিএনপির একটি অফিস আছে তাই মাহফিলে সমস্যা হলে আমরা দায়ী নই।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেন, মাহফিল বন্ধের বিষয়টি জেনেছি, খবর নিয়ে দেখবো।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ