চট্টগ্রাম নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এক আবৃত্তি অনুষ্ঠান চলাকালে একটি কবিতায় একাংশে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দ উচ্চারিত হওয়ায় আবৃত্তি অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিক এই ঘটনা ঘটে। 

কবি রবিউল হুসাইন রচিত কবিতা ‘এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট’ নামক কবিতা আবৃত্তির সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত একটি পক্ষ আবৃত্তির অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজকদের একজন নরেন আবৃত্তি একাডেমির সংগঠক মিশফাক রাসেল বলেন, “কোন শিল্পী কোন কবিতা আবৃত্তি করবেন তা আমাদের আগে থেকে জানা ছিল না। অনুষ্ঠান চলাকালে এক আবৃত্তিকার কবি রবিউল হুসাইন রচিত কবিতা ‘এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট’ আবৃত্তি শুরু করে। কবিতাটির মাঝপথে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার পরপরই আপত্তি তোলে একটি পক্ষ। ওই কবিতার পর আর একটি গান পরিবেশন করে আমরা কোন বিবাদে না জড়িয়ে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেই।” 

জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস-এর কর্মীরা এই কবিতার ব্যাপারে আপত্তি তোলে বলে আয়োজকরা জানান। 

এই প্রসঙ্গে জাসাস- এর সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ বলেন, ‘‘কবিতায় বঙ্গবন্ধু উচ্চারিত হওয়ায় অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়নি। আর আমরা বন্ধ করিনি। উপস্থিত জনতার রোষে আয়োজকরা অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল।” 

যে ছেলেটি কবিতা পড়ছিল, সে ক্ষমা চেয়েছে বলে জানান মামুনুর রশিদ। 

এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘‘একটা অনুষ্ঠানে আবৃত্তির মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বলার ঘটনায় একটা সমস্যার কথা শুনেছি। ওখানে আমাদের মোবাইল টিম ছিল। তারা জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আমরা পাইনি। কেউ থানায় কোন অভিযোগও করেনি।”

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ