গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কে ফুটানী বাজারসংলগ্ন এলাকায় রয়েছে শাকদহ বেইলি সেতু। জেলা শহরে মানুষের যোগাযোগের জন্য যাতায়াতের পথে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জায়গাটিতে কংক্রিটের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এদিকে অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে জমি ছাড়ছেন না মালিকরা। এতে আটকে গেছে সেতুর নির্মাণকাজ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস (এসইউপিআরবি)’ প্রকল্পের আওতায় জেলায় ছয়টি প্যাকেজে ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কে ফুটানী বাজারসংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৪ মিটার দীর্ঘ শাকদহ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ২২ মে সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সে কাজ শেষ হয়নি। মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে। নির্মাণ শেষ না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।
স্থানীয় কুন্দেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফজলুর রহমান বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ ঠিকমতোই হচ্ছিল। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এমনটি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সব জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত এ কাজের বাস্তবায়ন চায়।
বেইলি সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন ধর্মপুর এলাকার বাসিন্দা মো.
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতু ও বেইলি সেতুটি পাশাপাশি। বেইলি সেতুর বিভিন্ন স্থান ভাঙা। ঝুঁকি নিয়ে এর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। নির্মাণাধীন সেতুর এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হওয়ার পর প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ আছে। এ তথ্য জানিয়ে নির্মাণশ্রমিক মোখলেছুর রহমান বলেন, মানুষ জমি না ছাড়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ বলেন, সেতুটির বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। অল্প কিছু জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। সে প্রক্রিয়া শেষ করে সড়ক বিভাগ জমি বুঝিয়ে দিতে পারছে না। জমি পেলে বাকি কাজ কিছু দিনের মধ্যে শেষ হবে।
সেতু এলাকায় জমির মালিক পুন্ডল বাবু ও আ. রাজ্জাক। তাদের ভাষ্য, সেতুর ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু তারা টাকা পাননি। জমি অধিগ্রহণে চার ধারা নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করতে দেবেন না।
দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমল হোসেন বলেন, অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়ায় বাকি কাজ আটকে আছে। এ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমাম বলেন, অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ করতে তারা কাজ করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ শ ষ হয়
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’
ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।