বিশ্বজুড়ে ৭০টির বেশি দেশে সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে ‘গোস্ট’ র‌্যানসমওয়্যার। যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো সুরক্ষা সংস্থা (সিআইএসএ) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা, সরকার, শিক্ষা, প্রযুক্তি, উৎপাদন, ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতের সংস্থাগুলো এই সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।

সিআইএসএ, এফবিআই এবং মাল্টি-স্টেট ইনফরমেশন শেয়ারিং অ্যান্ড অ্যানালাইসিস সেন্টার (এমএস-আইএসএসি) গত বুধবার এক যৌথ বার্তায় জানায়, ২০২১ সালের শুরু থেকেই ‘গোস্ট’ সাইবার অপরাধীরা পুরোনো ও সুরক্ষাহীন সফটওয়্যার এবং ফার্মওয়্যারের ইন্টারনেটভিত্তিক সেবায় নির্বিচার আক্রমণ চালাচ্ছে। এ ধরনের আক্রমণের ফলে চীনের প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু প্রতিষ্ঠান সাইবার–ঝুঁকিতে পড়েছে। ‘গোস্ট’ র‌্যানসমওয়্যার পরিচালনাকারীরা সাধারণত ম্যালওয়্যার ফাইল, এনক্রিপ্টেড ফাইলের এক্সটেনশন, মুক্তিপণের নোট এবং ই–মেইল ঠিকানা পরিবর্তন করে থাকে, যার ফলে তাদের সুনির্দিষ্ট পরিচয় নির্ধারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এই গ্রুপ ‘গোস্ট’, ‘ক্রিং’, ‘ক্রিপ্টার’, ‘ফ্যান্টম’, ‘স্ট্রাইক’, ‘হ্যালো’, ‘উইকরমি’, ‘এইচএসহারাডা’ এবং ‘র‌্যাপচার’ নামেও পরিচিত।

অর্থলোভী এই সাইবার গ্রুপ উন্মুক্ত কোড ব্যবহার করে সার্ভারের সুরক্ষাত্রুটি কাজে লাগায়। বিশেষত ফোর্টিনেট (সিভিই-২০১৮-১৩৩৭৯), কোল্ডফিউশন (সিভিই-২০১০-২৮৬১, সিভিই-২০০৯-৩৯৬০) এবং মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ (সিভিই-২০২১-৩৪৪৭৩, সিভিই-২০২১-৩৪৫২৩, সিভিই-২০২১-৩১২০৭) সফটওয়্যারের পুরোনো ও অনিরাপদ সংস্করণ তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু।

‘গোস্ট’ র‌্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে সিআইএসএ এবং এফবিআইয়ের নেটওয়ার্ক নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞেরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, র‌্যানসমওয়্যার দিয়ে এনক্রিপ্ট হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে নিয়মিত এবং অফসাইট ব্যাকআপ রাখতে হবে। অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার এবং ফার্মওয়্যারের সুরক্ষাত্রুটি দ্রুত সময়ে সমাধান করতে হবে। বিশেষ করে ‘গোস্ট’ র‌্যানসমওয়্যারের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু সুরক্ষাত্রুটিগুলো (সিভিই-২০১৮-১৩৩৭৯, সিভিই-২০১০-২৮৬১, সিভিই-২০০৯-৩৯৬০, সিভিই-২০২১-৩৪৪৭৩, সিভিই-২০২১-৩৪৫২৩, সিভিই-২০২১-৩১২০৭) সঠিকভাবে শনাক্ত ও প্রতিরোধ করতে হবে। নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট করে সংক্রমিত ডিভাইস থেকে অন্য যন্ত্রে ভাইরাস ছড়ানো প্রতিরোধ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্ট এবং ই–মেইল সেবার জন্য ফিশিং-প্রতিরোধী মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (এমএফএ) চালু করতে হবে।

২০২১ সালের শুরুতে অ্যামিগো_এ এবং সুইসকমের সিএসআইআরটি টিম প্রথম ‘গোস্ট’ র‌্যানসমওয়্যার শনাক্ত করে।

সূত্র: ব্লিপিংকম্পিউটার ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ভ ই ২০২১

এছাড়াও পড়ুন:

চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার

বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ায় আজ শুক্রবার সকালে ভালুকের আক্রমণে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে ১০ জন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের অধিকাংশ ম্রো জনগোষ্ঠীর। ভালুকের কারণে আহত হওয়ার ঘটনায় আবেদন না করায় এই পর্যন্ত কেউ ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ার কাইনপ্রে ম্রো (৩৫) পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে জুমখেতে কাজ করতে যান। সেখানে জুমের পাশে কলাবাগানে কাজ করার সময় হঠাৎ কালো রঙের একটি ভালুক তাঁর ওপর আক্রমণ করে। ভালুকটি তাঁর পেটে ও মুখে আঘাত করতে থাকে। তাঁর চিৎকারে আশপাশে জুমের লোকজন এগিয়ে আসেন।

আহত কাইনপ্রে ম্রোর ভাই তনরুই ম্রো জানিয়েছেন, আশপাশের লোকজনের এগিয়ে আসা দেখে ভালুকটি কাইনপ্রে ম্রোকে ছেড়ে দিয়ে বনে পালিয়ে যায়। তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কাইনপ্রে ম্রোকে উদ্ধার করে দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়া জেলা শহর থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে। পাড়াটি রুমা উপজেলার গালেংগ্যা ইউনিয়নে পড়েছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহত কাইনপ্রে ম্রোর পেটে ও মাথায় গভীর ক্ষত আছে। এ জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, থানচি তিন্দু ইউনিয়নে মেনপই ম্রো নামের একজন ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথম ভালুকের আক্রমণের শিকার হন। ওই একজনসহ ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৫ বছরে ১০ জন ভালুকের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে থানচিতে দুজন, রুমাতে তিনজন, আলীকদমে একজন ও বান্দরবান সদর উপজেলা চিম্বুক পাহাড়ে চারজন রয়েছেন। কারও মৃত্যু না হলেও তাঁদের মধ্যে কেউ চোখ হারিয়েছেন, কারও হাত–পা পঙ্গু হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা একজন মারমা ও একজন খুমি ছাড়া অন্যরা সবাই ম্রো।

বন বিভাগের বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বনাঞ্চল কেটে উদ্যান বাগান ও জুমচাষ করা এলাকাগুলোতে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বাগানের কারণে ভালুক ও অন্যান্য বন্য প্রাণীরা আবাসস্থল ও বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যসংস্থান হারাচ্ছে। জীবনের তাগিদে তারা মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি হতে বাধ্য হচ্ছে। বন নির্ভর মানুষকে অন্যভাবে আয়ের সংস্থানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংরক্ষণ না হলে বন্য প্রাণীর সঙ্গে সহাবস্থান গড়ে উঠবে না। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা না হলে বন্য প্রাণী ও মানুষ কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন
  • ‘হুক্কা’ প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জাগপা
  • চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার