দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ ও নারী-শিশুসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ-সমাবেশ-মানববন্ধন হয়েছে।

আজ রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আজ সকালে ইডেন মহিলা কলেজের বকুলতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। নতুন বাংলাদেশে কেউ যেন আর ধর্ষণের শিকার না হন, সেই দাবি জানান তাঁরা।

সমাবেশে শিক্ষার্থী সুমাইয়া সাইনা বলেন, যে নারীরা অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থেকে ভূমিকা রেখেছেন, অভ্যুত্থানের পর দেখা যাচ্ছে, তাঁরা ঘরে ও রাস্তায় নিরাপদ বোধ করছেন না। রাষ্ট্র তাঁর নিরাপত্তা দিতে পারছে না। শহীদ মিনারে ফুল কুড়াতে গিয়ে একজন শিশুকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। নারী তাঁর প্রতিবেশীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। বাসে ধর্ষিত হন। কোথাও নারীরা নিরাপদ নন।

রওনক জাহান তন্নী বলেন, ‘আজ ঢাকায় বসে আমি আমার ময়মনসিংহে থাকা ১২ বছরের বোনটির জন্য উদ্বিগ্ন।’

স্কাইয়া ইসলাম বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা শুনছি। সেই বন্দোবস্তে নারীরা কোথায়, নারীর নিরাপত্তা কোথায়? একের পর এক এই ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা দেখেছি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পরও এই ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে। জুলাইয়ে নারীরা এসবের জন্য কি সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছিলেন?’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্মৃতি আক্তার ও তিলোত্তমা ইতি। একই দাবিতে আজ সন্ধ্যায় ইডেন মহিলা কলেজে একটি মশালমিছিল হওয়ার কথা রয়েছে।

আজ ইউল্যাবের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ‘লাগামহীন অপরাধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন’ হয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ‘নিরাপত্তা আন্দোলন’ শীর্ষক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণসহ সব ধরনের অরাজকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে বেলা তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ হওয়ার কথা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’