আমন্ত্রণ জানিয়ে ইলন মাস্ককে চিঠি লিখলেন ড. ইউনূস
Published: 23rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে শীর্ষ মার্কিন ব্যবসায়ী এবং স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ককে চিঠি লিখেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইলনকে চিঠি পাঠানো হয়। এতে ড. ইউনূস ইলন মাস্ককে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আজ রোববার এসব তথ্য জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যৎ সহযোগিতা অন্বেষণ এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে আরও অগ্রগতির লক্ষ্যে স্পেসএক্স, টেসলা এবং এক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কলে একটি বিস্তৃত আলোচনা করেন।
প্রেস উইং জানায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি মাস্ককে লেখা এক চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সফরে তিনি বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন, যারা এই শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম।
চিঠিতে ড.
চিঠিতে বলা হয়, স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি বাংলাদেশের অবকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত করা হলে তা বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবসমাজ, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ওপর রূপান্তরমূলক প্রভাব ফেলবে।
প্রেস উইং জানায়, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে এই সেবা চালু করতে স্টারলিংককে প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে তার স্পেসএক্স টিমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সমন্বয় করতে তার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে নির্দেশ দেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।