চালককে উল্টোপথে যেতে প্ররোচিত করলে যাত্রীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা
Published: 23rd, February 2025 GMT
রাজধানীতে উল্টোপথে রিকশাচালকদের যেতে প্ররোচিত করলে এবং আইনি প্রয়োগে বাধা দিলে যাত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া উল্টোপথে সরকারি যানবাহন চলাচল করলেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা (যা ঝুঁকিপূর্ণ) বিভিন্ন সড়কে উল্টোপথে চলাচল করে। প্রায় সব ক্ষেত্রে রিকশার যাত্রীরা রিকশাচালককে উল্টোপথে যেতে প্ররোচিত করেন। আবার ঢাকা মহানগরীর প্রধান সড়ক (যে সব সড়কে বাস চলাচল করে) ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যেখানে রিকশা চলাচলের অনুমোদন নেই সেসব সড়কেও রিকশা চলাচল করতে দেখা যায়।
এক্ষেত্রেও যাত্রীরা রিকশাচালকদের অননুমোদিত সড়কে প্রবেশ করতে প্ররোচিত করেন। উল্টোপথে এবং অননুমোদিত সড়কে রিকশা চলাচলের ফলে সড়কের স্বাভাবিক যানচলাচল বিঘ্নিত হয়ে যানজট বৃদ্ধির পাশাপাশি মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনুরূপভাবে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশা (সিএনজিচালিত) উল্টোপথে চলাচল করতে দেখা যায়।
উল্টোপথে চলাচলের কারণে সড়কে যানজট বৃদ্ধির পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য উল্টোপথে চলাচলকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করার সময় অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট যাত্রী ও চালক আইন প্রয়োগ করতে বাধা দেন। এমন পরিস্থিতিতে ফৌজদারি অপরাধ করার ফলে সংশ্লিষ্ট যাত্রী ও চালককে গ্রেপ্তারের পর আইনের হাতে সোপর্দ করতে হয়।
এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে সরকারি যানবাহন ও বিভিন্ন পেশাজীবী পরিচয় বহনকারী যানবাহন (যেমন- সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নামযুক্ত) বিভিন্ন সড়কে উল্টোপথে চলাচলপূর্বক এবং অবিবেচনাপ্রসূতভাবে সড়কে গাড়ি পার্কিং করে যানজট বৃদ্ধি করে। সম্প্রতি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উল্টোপথে চলাচলের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণের মতো ঘটনা ঘটেছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় ঢাকা মহানগরীর রিকশা যাত্রী, রিকশাচালক, মোটরসাইকেল চালক এবং সরকারি যানবাহন চালকসহ অন্য চালকদের উল্টোপথে না চলাচল করার জন্য এবং যাত্রী সাধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ অননুমোদিত যানবাহনে ভ্রমণ না করার জন্য এবং যাত্রী সাধারণকে উল্টোপথে অননুমোদিত সড়কে চালকদের যান নিয়ে প্রবেশ করতে প্ররোচিত না করার জন্য এবং ট্রাফিক পুলিশ বা ট্রাফিক সহায়তাকারী গ্রুপের সঙ্গে অযাচিতভাবে বাগবিতণ্ডা না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জোরদার করা হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগরী পুলিশ (ডিএমপি) সবার সহযোগিতা কামনা করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এমপ অনন ম দ ত ব যবস থ চ লকদ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।