ঢাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষরে ব্যাপক সাড়া
Published: 23rd, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও দোসর দলগুলোর নিষিদ্ধ করার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান ছাত্রজনতার গণঅবস্থান কর্মসূচির একাদশতম দিনে এ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
গণঅবস্থানের সংগঠকরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। গণঅবস্থান চলাকালে প্রতিদিনই গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে জুলাই গণহত্যাসহ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে গণএজাহার কর্মসূচি শুরু হবে।
সংগঠকরা আরো জানিয়েছেন, বিগত ১৬ বছরের নির্যাতন নিপীড়নের ভয়াবহতা অনুযায়ী ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে তেমন মামলা দায়ের হয়নি। এমনকি জুলাই বিপ্লবে ২ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতা শহীদ হলেও সব খুনীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এজন্য মূলত পুলিশের হয়রানি, অনীহা ও সহযোগিতার অভাব রয়েছে।
আর অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকেও মজলুমদের মামলা করাতে কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। গণএজাহার কর্মসূচির মাধ্যমে অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজাহারের তথ্য সরকার ও আদালতের কাছে জমা দিয়ে বিচার নিশ্চিত করা হবে।
গণঅবস্থানে অংশ নিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পরিচালনা করেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, গালিব ইহসান, সদস্য রাজু আহমেদ সদর , হাফেজ মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।
অন্যদের মাঝে আরো ছিলেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ইশতিয়াক আহমেদ ইফাত, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, হামিম হোসাইন শুভ, ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়াত, সহকারী সদস্য সচিব মো.
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছে। ছাত্রদলের ঢাবি শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে এতে সম্পৃক্ত হয় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জুলাই বিপ্লবের শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান চলছে।
গণবক্তৃতা, আবৃত্তি, জুলাই গণহত্যার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও র্যাপ সঙ্গীত পরিবেশনসহ নানা আয়োজনে চলছে এ কর্মসূচি। গণঅবস্থানের দশম দিন শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅবস থ ন ইসল ম আহম দ সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে সিলেটবাসীর গণঅবস্থান
সিলেটের উন্নয়ন খাতে বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে সিলেটবাসী।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মামুন, সম্পাদক রিটন
অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে সিসিকের পানির গাড়ি কোর্ট পয়েন্টের একটি অংশে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে পরিস্থিতি পরে স্বাভাবিক হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘উন্নয়ন বঞ্চিত সিলেট বরাবরই উপেক্ষিত। সরকার দেশের অন্য বিভাগে যে পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে, সেই অনুপাতে সিলেটকে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই এবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, সিলেটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক গণআন্দোলন। উন্নয়ন বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা বিছানা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবনের সামনে অবস্থান করব, যতক্ষণ না তারা আমাদের কথা শোনে।’’
তিনি উপস্থিত জনতাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হজরত শাহজালালের (রহ.) দরগাহ এলাকা থেকে শুরু হয় ‘সিলেট আন্দোলনের’ মশাল মিছিল। মিছিলটি দরগাহ গেট, জিন্দাবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, চৌহাট্টাসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
মশাল মিছিলে কয়েকশত নেতাকর্মী অংশ নেয়। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার; যাতে ‘উন্নয়ন চাই, বৈষম্য নয়’, ‘সিলেটের প্রাপ্য, ফেরত দাও’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা ছিল।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে নগরীর কুমারপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আরিফুল হক চৌধুরী। সভায় ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে সর্বজনীন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন সিলেটের রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আইনজীবী, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
তাদের দাবি, সিলেটের অবহেলিত অবকাঠামো উন্নয়ন, রেলপথ সংস্কার, বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি বরাদ্দে ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করা।
ঢাকা/নুর/বকুল