রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে যেভাবে বদলে গেল যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য
Published: 27th, February 2025 GMT
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় মিত্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের এই তিন বছরে ইউক্রেনকে অবিচলভাবে সমর্থন দিয়েছে দেশটি; কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কিয়েভ নিয়ে অবস্থান বদলাতে শুরু করে ওয়াশিংটন।
গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছর পূর্তির দিন উত্থাপিত একটি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল। এতে ইউক্রেনে হামলা চালানোয় রাশিয়ার নিন্দা করা হয়।
ইউএনজিএতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একই দিন আলাদা করে যুক্তরাষ্ট্রও একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। প্রস্তাবে সংঘাতের জন্য স্পষ্ট করে রাশিয়াকে দায়ী করা হয়নি।
অন্যদিকে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে যুদ্ধের ইতি টানার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইউএনজিএতে উত্থাপিত এই দুই প্রস্তাব থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে বাড়তে থাকা দূরত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে। একইসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন কিয়েভ নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতির পরিবর্তন স্পষ্ট হয়েছে।
গত সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত ইউক্রেন ও তার মিত্রদের প্রস্তাবটির শিরোনাম ছিল ‘অ্যাডভান্সিং আ কম্প্রিহেনসিভ, জাস্ট অ্যান্ড লাস্টিং পিস ইন ইউক্রেন (ইউক্রেনে একটি সমন্বিত, ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া)। যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৮টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করা এই প্রস্তাবে স্পষ্ট করে বলা হয়, কিয়েভ নয়, মস্কোই চলমান যুদ্ধ শুরু করেছিল ২০২২ সালে। এতে ইউক্রেনের ‘সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা’র পক্ষে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করতে জাতিসংঘের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এতে অবৈধভাবে ভূখণ্ড দখলে নেওয়া বা বলপ্রয়োগের হুমকির বিরুদ্ধে ইউএনজিএর সদস্যদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। সংঘাতে জড়িত উভয় পক্ষকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে এবং সাধারণ মানুষ- ‘বিশেষ করে নারী ও শিশু’র সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্রদের উত্থাপিত এই প্রস্তাবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে রুশ সেনাদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং যুদ্ধের সমাপ্তি টানা।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাশাপাশি আরও যেসব দেশ প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে, সেগুলোর মধ্যে ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া ও হাঙ্গেরি অন্যতম।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মহাভারত’ হতে পারে আমির খানের শেষ সিনেমা
বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ খ্যাত আমির খান হয়তো এবার বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ‘মহাভারত’-ই হতে পারে তাঁর অভিনয় জীবনের শেষ সিনেমা।
সম্প্রতি ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, “মহাভারত আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। আমি মনে করি, এটা এমন এক কাজ, যা একবার করলে মনে হবে জীবনে আর কিছুই বাকি নেই। এতটাই আবেগঘন, বিস্তৃত আর মহিমান্বিত এই কাহিনি। এই মহাকাব্যে যা কিছু রয়েছে, তা জীবনেও আছে।”
৫৯ বছর বয়সী এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘মহাভারতের মতো জটিল ও গভীর প্রকল্পের পর হয়তো মনে হবে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। নিশ্চিত না, তবে এমনটাই মনে হচ্ছে।’
তবে এখানেই থেমে যেতে চান না তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যেতে চান বলেও জানিয়েছেন আমির খান। তাঁর কথায়, “আমি চাই, আমার মৃত্যু হোক পায়ে জুতো পরে।” অর্থাৎ কাজ করতে করতেই চলে যেতে চান তিনি।
আমির এখন ব্যস্ত ‘সিতারে জামিন পার’ সিনেমার প্রচারণা নিয়ে। এই সিনেমাটির মাধ্যমেই ‘লাল সিং চাড্ডা’র পর আবারও বড় পর্দায় ফিরছেন তিনি।
‘সিতারে জামিন পার’ মূলত ২০০৭ সালের বহুল প্রশংসিত ‘তারে জামিন পার’-এর সিকুয়েল। এই ছবিতেও আমির কেবল অভিনয়ই করেননি, বরং প্রযোজনার দায়িত্বও নিয়েছেন।
এবারের সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছেন জেনেলিয়া ডি সুজা। ছবিতে রয়েছে আরও চমক। একসঙ্গে ১০ নতুন মুখকে বড় পর্দায় হাজির করছেন আমির খান। তাঁরা হলেন:
আরৌশ দত্ত, গোপী কৃষ্ণ ভার্মা, সাম্বিত দেশাই, বেদান্ত শর্মা, আয়ুষ বানসালি, আশীষ পেন্ডসে, ঋষি সাহানি, ঋষভ জৈন, নমন মিশ্র এবং সিমরান মঙ্গেশকর।
তাছাড়া এই ছবিতে আরও রয়েছেন দারশিল সাফারি, সোনালি কুলকার্নি, ব্রিজেন্দ্র কালা এবং সুরেশ মেননের মতো অভিজ্ঞ অভিনেতারা।
‘সিতারে জামিন পার’ সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২০ জুন। এখন দেখার অপেক্ষা, এই ছবি দিয়ে আমির খান আবার কতটা দর্শকের হৃদয় জয় করতে পারেন। আর তার পরেই শুরু হতে পারে সেই বহু প্রতীক্ষিত ‘মহাভারত’-এর যাত্রা।