ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লন্ডনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে তিনি জেলেনস্কিকে বলেন, আমরা আপনার ও ইউক্রেনের সঙ্গে আছি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি দপ্তর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে স্টারমার ইউক্রেনের প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানান।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার যুক্তরাজ্যে পা রাখার পর জেলেনস্কিকে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে উষ্ণ আলিঙ্গন করে স্বাগত জানান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের অটল সমর্থনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “পুরো যুক্তরাজ্য আপনার সাথে আছে। যতদিন প্রয়োজন, আমরা ইউক্রেনের পাশে থাকব।” 

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পের সঙ্গে ঝড় তুলে লন্ডনে জেলেনস্কি, যুদ্ধের পরিণতি কী

তুরস্কে রুশ-মার্কিন বৈঠক, ‘গা জ্বলছে পশ্চিমা এলিটদের’

স্টারমার আরো জানান, লন্ডনে সাধারণ মানুষও জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই রাস্তায় সাধারণ মানুষকে আপনার জন্য উল্লাস করতে শুনেছেন। তারা এখানে এসেছে আপনাকে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে।”

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করতে ২ দশমিক ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড ঋণ চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। জানা গেছে, ঋণের অর্থ রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদের মুনাফা থেকে পরিশোধ করা হবে। ব্রিটিশ চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস এবং ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্গেই মার্চেনকো চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সাহায্য বন্ধ করতে পারে কিনা, সেই প্রশ্ন যখন আলোচিত হচ্ছে, তখন যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এই ঋণ ও সমর্থন জেলেনস্কির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

এই সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্যকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। পরে স্টারমার তার এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘রাশিয়ার এই বেআইনি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে একটি পথ খুঁজে বের করতে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” রবিবার ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করার কথা জেলেনস্কির।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র প র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ