‘জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলাই একমাত্র সমাধান, একমাত্র শান্তি’- কথাগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাজিদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী জাহিদা ফিজ্জা কবিরের। সাজিদা ফাউন্ডেশনের সূচনাকাল থেকে শক্ত হাতে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। নিজেকে তিনি ভাবেন এমন একজন মানুষ, যার কাছে রয়েছে সবার ঠাঁই। 
 
'সবার জন্য উদারতা এবং সহমর্মিতা রয়েছে আমার মধ্যে। কিন্তু একই সাথে, সবসময়ে ডুবে রয়েছি কাজে, ব্যস্ততায়। কাউকে দেওয়ার মতো খুব বেশি সময় হয়ে ওঠে না। যেন ঢেউয়ের মতো, কখনোই বিশ্রাম নেই, সবসময়ে নিবিষ্ট, নিমজ্জিত রয়েছি নিজের দায়িত্বে', বলেন জাহিদা ফিজ্জা কবির।

মাত্র ২ জন মানুষ নিয়ে শুরু করে এখন ৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে সাজিদা ফাউন্ডেশনে, আর এতে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৬০ লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী। 

'যখন দেখি নতুন প্রজন্ম আমার মূল্যবোধ নিজের মাঝে লালন করছে, মানুষের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করছে, তখন আমার গর্ব হয়। জীবনভর শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেছি এবং এখন সেটি নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া আমার জন্য গর্বের বটে', বলেন তিনি।  

জাহিদা ফিজ্জা কবির বলেন, 'আমি মনে করি, ঐক্যবদ্ধ নারীদের মাঝে রয়েছে কঠোর শ্রম এবং লক্ষ্য অর্জনের পূর্ণ ক্ষমতা। একতার মাধ্যমেই তারা নিজের প্রতিভা বিকশিত করে দেশ ও পৃথিবীর উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। নিজস্ব এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীরা সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারেন।'

ইউনিভার্সিটি অব দ্যা ফিলিপাইনস থেকে সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে স্নাতক করেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। এরপর ভারমন্টের স্কুল ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনিং থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল ম্যানেজমেন্টে। এছাড়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তার একটি পিজি ডিপ্লোমা রয়েছে অর্গানাইজেশনাল লিডারশিপ বিষয়ে। 

সাজিদা ফাউন্ডেশনের পক্ষে 'আইকনিক কম্পানিজ ক্রিয়েটিং আ বেটার ওয়ার্ল্ড ফর অল' সম্মাননা পেয়েছেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। ওম্যান্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডব্লিউআইসিসিআই) বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) থেকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।


জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রদানের জন্য বহু বছর ধরে জাহিদ ফিজ্জা কবিরের সহায়তায় সাজিদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। বিশ্ব নারী দিবস-২০২৫ এ 'এক্সেলারেট অ্যাকশন-  এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দা ফিউচার' ক্যাম্পেইনে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে তার অবদান।

উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছেন যে নারীরা- তাদের জন্য জাহিদা ফিজ্জা কবিরের বার্তা হলো, 'নিজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে, জানতে হবে নিজের সুপ্ত প্রতিভা কোথায় এবং খুঁজে বের করতে হবে নিজের দুর্বলতাগুলো। কাজ করতে গিয়ে নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দেওয়া যাবে না, নিজের যত্ন নিতে হবে, বজায় রাখতে হবে আত্মসম্মান। এতে করে সবার উপকার করা সহজ হবে। জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকতে হবে স্পষ্ট।'
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জয় ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ