সিংড়া জাতীয় উদ্যানে আগুন, পুড়ল ১৭ একর বেতবাগান
Published: 3rd, March 2025 GMT
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় উদ্যান সিংড়া শালবনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ১৭ একরের বেশি বেতবাগান পুড়ে গেছে।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নে সিংড়া শালবনের উত্তর প্রান্তে বেতবাগান অংশে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক নুরুন্নাহার জানান, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১৭ একর জমির বেতবাগান পুড়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে হিসেব করা হয়েছে।
দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৮৫৯ দশমিক ৯৩ একর জমির ওপর সিংড়া শালবন। ২০১০ সালে বন বিভাগ এই বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। শালগাছ ছাড়াও এই বনে রয়েছে জারুল, তরুল, শিলকড়ই, শিমুল, মিনজীরি, সেগুন, গামারি, আকাশমণি, ঘোড়ানিম, সোনালু, গুটিজাম, হরীতকী, বয়রা, আমলকী, বেতসহ বিভিন্ন রকমের উদ্ভিদ, লতাগুল্ম, ভেষজ ও ফুলের গাছ।
সোমবার দুপুরে হঠাৎ বেত বাগানে আগুন দেখতে পায় বন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। পরে তারা বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করলে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ পাল জানান, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। এছাড়াও স্থানীয়ভাবেও আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বড় কোন গাছ পুড়ে না গেলেও বেত বাগানের বড় একটি অংশ পুড়ে গেছে। কিভাবে আগুন লেগেছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত সব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে বনের প্রবেশপথের একটি বাঁশবাগান থেকে এই আগুনের উৎপত্তি হয়েছে। পরে এই আগুন আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
বীরগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন জানান, বনের উত্তর দিকে বেত বাগানে আগুন লেগেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বড় গাছের ক্ষতি না হলেও ছোট গাছগুলো পুড়ে গেছে।
তিনি জানান, বনে শুকনা পাতা থাকার কারণে এবং বাতাসের গতিবেগের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন বন বন ব ভ গ র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা