ফতুল্লায় চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ, উদ্ধার করলো এলাকাবাসী
Published: 4th, March 2025 GMT
ফতুল্লায় দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় শরীফ মোল্লা নামক এক ইট বালুর ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ওই ব্যবসায়িকে উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে।
জানা গেছে, সোমবার রাত আনুমানিক দশটার সময় ব্যবসায়ী শরীফ মোল্লাকে দূর্র্ধষ মাদক কারবারী এবং সন্ত্রাসী উৎস তার দলবল নিয়ে অস্ত্রের মুখে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ফতুল্লার ইসদাইর কাপুইরাপট্টি এলাকায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরীর পেছনে নির্জন মাঠে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়।
শরীফ মোল্লাকে দিয়ে তার পরিবারের কাছে ফোন করিয়ে এই টাকা দাবি করে অপগরণকারীরা। তখন শরীফ মোল্লার স্ত্রীর বড় ভাই কামরুল মেম্বার বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শরীফ মোল্লাকে উদ্ধার করে। এ সময় বহু লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ভূক্তভোগী শরীফ মোল্লা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদক ব্যবসায়ী উৎস তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় দুইদিন আগে উৎস এসে তার ইট বালু পরিবহনের নসিমন গাড়িটি নিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি গাড়িটি উদ্ধার করেন।
এতে আরো ক্ষুব্দ হয়ে উৎস ও তার বাহিনী তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে টাকা দাবি করে এবং মারধোর করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তিনি প্রানে বেঁেচ যান। কিন্তু এখন তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, একজন শীর্ষ যুবদল নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে নতুন করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী উৎস। আগে সে আওয়ামী লীগের এক নেতার নাম ভাঙ্গাতো। এই সন্ত্রাসী প্রতিদিনই ফতুল্লা থানার গাবতলী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। গত এক সপ্তাহে তিনটি বাড়িতে গিয়ে চাঁদার দাবিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। রাস্তা ঘাটে প্রকাশ্যে যাকে তাকে মারধর করছে। মাসদাইর কাবরস্থান থেকে শুরু করে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দোকানপাটে চাঁদাবাজী করছে।
ফলে ওই এলাকার মানুষ এই সন্ত্রাসীর অত্যাচারে একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গাবতলী এলাকায় কামরুল মেম্বার, মনির হোসেন, জামাই কামরুল, তুহিন সহ আরো অনেকের বাড়িতে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। এতে গাবতলী এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত এই উৎস নারায়ণগঞ্জের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে অপর মাদক ব্যবসায়ী পেটকাটা রকির সহযোগী। বিগত প্রায় এক যুগ ধরে এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং বহুবার মাদক সহ গ্রেফতারও হয়েছেন। কয়েক মাস আগে ৫০ কেজি গাজা সহ কুমিল্লায় গ্রেফতার হয়েছিলো এই উৎস। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে এখন সে যুবদলের পরিচয় দিচ্ছে।
যদিও এই সন্ত্রাসী কোনো দলের কোনো পদে নেই। দিনের পর দিন ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে এখনই আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এই সন্ত্রাসীবাহিনী এলাকায় আরো অঘটন ঘটাবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ অপহরণ এল ক ব স ব যবস য় এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’