দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণ দিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেসে ট্রাম্পের প্রথম যৌথ ভাষণটি প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট দীর্ঘ ছিল।

বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ভাষণের শুরুতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা ইজ ব্যাক। আমরা নতুন করে শুরু করেছি। এই কদিনে যা করে দেখিয়েছি তা অনেকে বিগত চার বছরেও পারেননি। 

আরো পড়ুন:

কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা ট্রাম্পের

জেলেনস্কি শান্তি চান না: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দাক্ষিণ সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছি। মার্কিন সেনা এবং বর্ডার পেট্রল টিম মোতায়েন করেছি। মারাত্মক কাজ করেছে তারা। ফলস্বরূপ গত মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ ছিল সবচেয়ে কম। জো বাইডেনের সময়ে এক মাসে শত শত অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেছে সীমান্তে। 

এ সময় সীমান্ত শক্তিশালী করতে আইন পাসে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান ট্রাম্প।

ট্রাম্প আরো বলেন, গত মঙ্গলবার তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন, সেখানে স্থগিত মার্কিন সামরিক চালান অব্যাহত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে ইউক্রেন প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।

কংগ্রেসের ভাষণে কানাডা এবং মেক্সিকোর মাদক ফেন্টানিল নিয়েও কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘কানাডা ও মেক্সিকো থেকে এত পরিমাণে ফেন্টানিল আমাদের দেশে আসতে আগে কখনও দেখা যায়নি।’ এটি হাজার হাজার পরিবার ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, আগামী দিনে মার্কিন অর্থনীতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কারণ তার প্রশাসন কানাডা, মেক্সিকো, চীন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প আরো বলেন, গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঞ্চল করা হবে। তার প্রশাসন এটি পেতে যেকোনো উপায়ে কঠোর পরিশ্রম করছে।

কংগ্রেসে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের সমালোচনা করেন। তিনি আমেরিকার ইতিহাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশ করে বলেন, তাদের খুশি করার জন্য, হাসানোর জন্য বা করতালি দেওয়ার মতো আমার বলার কিছুই নেই।

তিনি আরো বলেন, আমি একটি ভয়াবহ রোগের প্রতিকার খুঁজছি কিন্তু তারা এখনও আমাকে সমর্থন করছে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক এবং এটা এভাবে হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, আমাদের নাগরিকদের ভালোর জন্য আসুন একসঙ্গে কাজ করি এবং সত্যিকার অর্থে আমেরিকাকে আবারও মহান করে তুলি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ