বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা
Published: 6th, March 2025 GMT
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়সহ বাংলাদেশ ও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এসব কিছুর পাশাপাশি তাঁদের আলোচনায় বর্তমান ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলোও স্থান পেয়েছে।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জয়শঙ্কর নিজেদের মধ্যে আলোচনার বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিয়েছেন।
পোস্টে জয়শঙ্কর লিখেছেন, ‘আমরা ইউক্রেন সংঘাত, পশ্চিম এশিয়া, বাংলাদেশ, কমনওয়েলথসহ নানা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছি। অনিশ্চিত ও অস্থির বিশ্বে ভারত-যুক্তরাজ্য স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে।’
বাংলাদেশ বিষয়ে নিজেরা ঠিক কী আলোচনা করেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জয়শঙ্কর। তবে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত ও পালিয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন বলে গুঞ্জন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তখন লন্ডন জানিয়েছিল, ওই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার মতো কোনো আইন যুক্তরাজ্যের ছিল না।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির একজন এমপি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি দেশটির সিটি মন্ত্রী ছিলেন। কিছু অভিযোগের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন নীতি পরিবর্তন করেছে ওয়াশিংটন। এর পর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধ নিয়ে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি বিষয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।
জয়শঙ্কর গত মঙ্গলবারের কিছু অংশ ও পরদিন বুধবার যুক্তরাজ্যের চেভেনিং হাউসে কাটিয়েছেন। এটা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন। একই সময়ে সেখানে জয়শঙ্করের স্ত্রী কিয়োকো জয়শঙ্কর ও ল্যামির স্ত্রী নিকোলা গ্রিনও উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বাসভবনে আলোচনার পরেই জয়শঙ্কর এক্সে পোস্ট দেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের আলোচনায় কৌশলগত সমন্বয়, রাজনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য চুক্তি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, যোগাযোগ এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের বিনিময় বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এসব বিষয় আরও শক্তিশালী করতে এবং সেগুলোর কাঠামো গঠনের পরবর্তী ধাপ ঠিক করতে আমরা সম্মত হয়েছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।