প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবকে বেছে নেওয়ার কারণ জানালেন ট্রাম্প
Published: 7th, March 2025 GMT
প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিন জানান, আগামী দেড় মাসের মধ্যে তিনি সৌদি আরবে সফর করতে পারেন। খবর জিও নিউজের।
ট্রাম্প উল্লেখ করেন, প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও তার প্রথম বিদেশ সফর ছিল রিয়াদে। যেখানে তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি ঘোষণা করেছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমার অনুরোধে সৌদি আরব আগামী চার বছরে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরব এককভাবে মার্কিন-ইউক্রেন বৈঠকের আয়োজন করবে।
ফেব্রুয়ারিতে, ট্রাম্প পিজিএ ট্যুর এবং সৌদি মালিকানাধীন লিভ গলফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যাতে এই দুই সংস্থার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের সমাধান করা যায়।
ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদে তার জামাতা এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপদেষ্টা জারেড কুশনার একটি প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম চালু করেন, যা ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরও সৌদি আরব থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পায়।
সম্প্রতি, ট্রাম্প বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপক বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং এবং অ্যাপল রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।