ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে (২০) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তরুণেরা ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, যে বাড়িতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সেটি মাসখানেক ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এই সুযোগে সন্ধ্যা হলেই সেখানে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মাদক ও জুয়ার আসর বসাত।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকায় পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে এক নারীর চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি জড়িত দুজনকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান অভিযুক্ত আরও দুজন।

এ ঘটনায় আজ রোববার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। এতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁও বটতলা এলাকার আশরাফুল ইসলাম ওরফে সিয়াম (২০), জীত সরকার (১৯), মো.

লিমন (১৮) ও মো. ইয়াসিনকে (১৮) আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আশরাফুল ও জীত গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি দুজন পলাতক। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগী নারীকে আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে ভুক্তভোগী নারী পরিবারের অমতে এক যুবককে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ১৫ দিন আগে মনোমালিন্য থেকে স্বামী তাঁকে ঢাকার ভাড়া বাসায় একা রেখে চলে যান। মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। স্বামীর কোনো খোঁজ না পেয়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চাঁদপুরে ফিরে যান। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাঁকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে গত শুক্রবার সকালে তিনি চাঁদপুর থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় ফিরে আসেন। রাজধানীর একটি মাজারে তিনি ওই রাত যাপন করেন।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামি

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।

এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ