ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, ‘মাগুরায় আমাদের বোনকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

সোমবার হাইকোর্ট গেটের সামনের সড়কে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।

মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকে আসা প্রায় হাজারখানেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা গতানুগতিক ধারার বক্তব্য শুনতে পাচ্ছি। সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব আমরা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করছি।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনরা ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাজ পথে নেমে এসেছে। তারা ক্লাস বর্জন করেছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সমর্থন জানাচ্ছি। আমাদের বোনের ধর্ষকদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

ছাত্রদলের সভাপতি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের সমাজ ব্যবস্থা যে পরিমাণে ধ্বংস হয়েছে, আমরা সেটির পরিবর্তন চাই। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যদি কোনো সরকার গঠিত হয়, তাহলে সেই সরকার নারী নির্যাতন বন্ধ করবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যতদিন রয়েছেন, দয়া করে আজ থেকে আপনারা আরও বেশি সচেষ্ট হন। প্রতিটি ধর্ষণ, নিপীড়নের ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুনিশ্চিত করেন। এছাড়াও অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে না পারলে আমরা আপনাদের ওপর আঙুল তুলতে বাধ্য হবো।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল সরকার। এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ দেশের সব মানুষ সমর্থন দেওয়ার পরেও তারা কিন্তু আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তারা উন্নতি করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন মাগুরাতে আট বছরের শিশুকে কীভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু এ দেশের কিছু মানুষ নারীদের পোশাক নিয়ে বার বার কথা বলে। নারীদের পোশাক যদি সমস্যা হতো তাহলে কীভাবে আমার আট বছরের বোন ধর্ষনের শিকার হয়, ছাত্রদল প্রশ্ন রাখতে চায়। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠেছে সেজন্য গত সাত বা আট মাস ধরে নারীর প্রতি যে সহিংসতা যে নির্যাতন সেগুলো কিন্তু ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণের কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। ছাত্রদল আহ্বান জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই আইন-আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কঠোর করতে হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র জপথ পর স থ ত সরক র ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ