কিডনি ভালো রাখতে ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন
Published: 10th, March 2025 GMT
ছোট থেকে সবারই পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে ফাস্টফুড। কেউ কেউ নিয়মিত এ ধরনের খাবার খান। কিন্তু গবেষণা বলছে, ঘন ঘন ফাস্টফুড খেলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে কিডনিস্বাস্থ্যে বেশি প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া কীভাবে শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে।
উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ: ফাস্টফুড জাতীয় খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অভ্যাস কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর চর্বি: অনেক ফাস্টফুড আইটেমে পাওয়া ট্রান্সফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ চাপ বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদে এসব খাবার কিডনির ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার: ফাস্টফুড খাবারের সঙ্গে প্রায়ই চিনিযুক্ত পানীয় এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া হয়, যা ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এসবই কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ফাইবার এবং পুষ্টির অভাব: ফাস্টফুডে সাধারণত ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি কম থাকে, যা কিডনির কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টি ছাড়া এসব খাবার কিডনিতে পাথর এবং অন্যান্য কিডনি-সম্পর্কিত সমস্যা বাড়াতে পারে।
ডিহাইড্রেশন: অনেক ফাস্টফুডে বিকল্প লবণের পরিমাণ বেশি এবং পানির পরিমাণ কম থাকে, যা শরীরে ডিহাইড্রেশন তৈরি করতে পারে। এর ফলে কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং কিডনিতে পাথর ও মূত্রনালির সংক্রমণ বাড়াতে পারে।
স্থূলতা: নিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়ার সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সম্পর্ক রয়েছে। উভয়ই কিডনি রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকির কারণ।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি: ফাস্টফুডে থাকা উচ্চ ক্যালোরি, উচ্চ চিনির উপাদান টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এর ফলে কিডনি রোগের ঝুঁকিও বাড়ে।
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব: ফাস্টফুডে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ শুধু কিডনির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে না বরং হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ক্যান্সারের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ায়। এসব রোগ কিডনির কার্যকারিতাকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
সুস্থ থাকতে তাই যতটা সম্ভব ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন এবং খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন।
[সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ডন
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।
এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’