রাশিয়ায় রাতভর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ এই ড্রোন হামলায় কমপক্ষে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে ইউক্রেনেও রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। 

রুশ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

কুরস্কে আরো ৩ এলাকা পুনরুদ্ধারের দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের চেয়ে রাশিয়াকে সামলানো সহজ: ট্রাম্প

মস্কোর গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোবিয়েভ বলেছেন, রাজধানীর ঠিক বাইরে ভিদনয়ে এবং ডোমোদেদোভো শহরে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। একটি আবাসিক ভবনের সাতটি অ্যাপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, শহরের দিকে অগ্রসর হওয়া ৭৩টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষে একটি ভবনের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, হামলার পর একটি জেলা ট্রেন নেটওয়ার্ক স্থগিত করা হয়েছে। মস্কোর বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হওয়ার পর থেকে এটি অন্যতম বড় একটি হামলা।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে সৌদি আরবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি জরুরি বৈঠকের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই ঘটনা ঘটে। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে গভর্নর ভোরোবিয়েভ মস্কো অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাপার্টমেন্টগুলোর একটি এবং পুড়ে যাওয়া যানবাহনের ছবি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রাতভর হামলার পর তিন শিশুসহ ১২ জনকে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ফ্ল্যাট থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।

মস্কোর শেরেমেতিয়েভো, ডোমোদেদোভো এবং ভনুকোভো বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মস্কো এবং রাশিয়ার নয়টি অঞ্চলে রাতভর ৩৩৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আটকানো হয়েছে অথবা ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাজধানী কিয়েভ এবং আরো বেশ কয়েকটি অঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলার খবর জানিয়েছেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র র তভর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ