রাশিয়ায় ব্যাপক ড্রোন হামলা ইউক্রেনের
Published: 11th, March 2025 GMT
রাশিয়ায় রাতভর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ এই ড্রোন হামলায় কমপক্ষে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনেও রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
রুশ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
কুরস্কে আরো ৩ এলাকা পুনরুদ্ধারের দাবি রাশিয়ার
ইউক্রেনের চেয়ে রাশিয়াকে সামলানো সহজ: ট্রাম্প
মস্কোর গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোবিয়েভ বলেছেন, রাজধানীর ঠিক বাইরে ভিদনয়ে এবং ডোমোদেদোভো শহরে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। একটি আবাসিক ভবনের সাতটি অ্যাপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, শহরের দিকে অগ্রসর হওয়া ৭৩টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষে একটি ভবনের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, হামলার পর একটি জেলা ট্রেন নেটওয়ার্ক স্থগিত করা হয়েছে। মস্কোর বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হওয়ার পর থেকে এটি অন্যতম বড় একটি হামলা।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে সৌদি আরবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি জরুরি বৈঠকের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই ঘটনা ঘটে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে গভর্নর ভোরোবিয়েভ মস্কো অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাপার্টমেন্টগুলোর একটি এবং পুড়ে যাওয়া যানবাহনের ছবি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রাতভর হামলার পর তিন শিশুসহ ১২ জনকে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ফ্ল্যাট থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
মস্কোর শেরেমেতিয়েভো, ডোমোদেদোভো এবং ভনুকোভো বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মস্কো এবং রাশিয়ার নয়টি অঞ্চলে রাতভর ৩৩৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আটকানো হয়েছে অথবা ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাজধানী কিয়েভ এবং আরো বেশ কয়েকটি অঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলার খবর জানিয়েছেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র র তভর
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র
গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানেরইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।
ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।