ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনী নিয়ে ভুয়া খবরের প্রতিবাদ আইএসপিআরের
Published: 11th, March 2025 GMT
ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক প্রতিবাদলিপিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধানের দক্ষ নেতৃত্বের অধীন সেনাবাহিনী সুসংগঠিত, ঐক্যবদ্ধ ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইএসপিআরের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, দ্য ইকোনমিক টাইমস ও দ্য ইন্ডিয়া টুডেসহ ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত একের পর এক ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ওই সব প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর ভেতরে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা এবং শৃঙ্খলা (চেইন অব কমান্ড) ভেঙে পড়ার কথা বলা হয়েছে। এসব প্রতিবেদন পুরোপুরি মিথ্যা এবং সেগুলো বাংলাদেশ ও এর সশস্ত্র বাহিনীর সুনাম ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করার জন্য পরিকল্পিত অপপ্রচারের অংশ বলে প্রতীয়মাণ হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলছি যে সেনাপ্রধানের দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। আমাদের চেইন অব কমান্ড শক্তিশালী রয়েছে এবং জ্যেষ্ঠ জেনারেলরাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব সদস্য সংবিধান, চেইন অব কমান্ড ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আনুগত্যে অবিচল রয়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে অনৈক্য বা আনুগত্যহীনতার যেকোনো অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট ও বিদ্বেষপূর্ণ।’
আইএসপিআর বলেছে, এটা বিশেষভাবে উদ্বেগের যে দ্য ইকোনমিক টাইমস বারবার এ ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সর্বশেষ এই প্রতিবেদনের মাত্র এক মাস আগেও ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি এই গণমাধ্যমে একই ধরনের মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। পেশাগত এ আচরণের কারণে এসব সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়া বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল ও কয়েকটি অখ্যাত টেলিভিশন চ্যানেল এসব মিথ্যা প্রচার করেছে, যাতে অপপ্রচার আরও তীব্র হয়েছে। মনে হচ্ছে, তারা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি মেনে চলার পরিবর্তে মিথ্য তথ্য ছড়ানো এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।’
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এসব সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে ভারতভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি ভালো সাংবাদিকতার চর্চা করার এবং যাচাই না করে ও চটকদার সংবাদ প্রকাশ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করা হচ্ছে যে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগে তারা আইএসপিআরের কাছ থেকে মন্তব্য ও ব্যাখ্যা চাইবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে সঠিক ও আনুষ্ঠানিক তথ্য সরবরাহ করার জন্য আইএসপিআর সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।’
আইএসপিআর বলেছে, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবিচল রয়েছে। আমরা সব সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণ করার এবং মিথ্যা বয়ান প্রচার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। এসব মিথ্যা তথ্য শুধু অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ
ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও দিন দিন বেড়ে চলা মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
একই সঙ্গে, ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের প্রতি জোরালো সমর্থন ও সংহতি আবারো তুলে ধরেছে এই দুই দেশ।
জাতিসংঘে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের মধ্যে এক বৈঠকে এ উদ্বেগ ও সংহতির বিষয়টি উঠে এসেছে।
বৈঠকে দুই নেতা সম্মেলন থেকে কার্যকর ও ইতিবাচক ফল আসার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তারা নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা আরো জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে, পারস্পরিক যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে সরাসরি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।
ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন এ প্রসঙ্গে এক বার্তায় জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
ঢাকা/হাসান/ইভা