রাজশাহীতে অটোরিকশায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ইঙ্গিত করে অশোভন আচরণ করেছেন এক ব্যক্তি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রী তার এমন কর্মকাণ্ডের ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ।

ঘটনাটি মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলের। ওই ছাত্রী ফেসবুকে অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, “আজকে পরীক্ষা দিয়ে ইফতারি কিনে বাসায় আসার সময় বর্ণালীর মোড়ে এই .

..বাচ্চা আমার সামনে বসে। হাতে কাপড়ের বড় বস্তা ছিল। বারবার আমার পায়ে টাচ হচ্ছিল। ভাবলাম, এতো বড় ব্যাগ, তাই হয়তো সমস্যা হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আরো বেশি সমস্যা হওয়ার পর পা সরাতে বলি। তারপর সে নিজের গোপনাঙ্গ নিয়ে অশোভন আচরণ করে।”

ওই ছাত্রী আরো লেখেন, “যখন বুঝতে পারে ভিডিও করছি, তখনই হাত সরিয়ে নেয়। রোজা-রমজানের মাসেও এদের হেদায়েত হয় না। ভেতরের...জেগে উঠে মেয়ে দেখলেই। সারাটাদিন রোজা রেখে পরীক্ষা দিয়ে যখন এসব সহ্য করা লাগে, তখন আর কিছু বলার থাকে না আসলে!”

আরো পড়ুন:

গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, বরখাস্ত এসপির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ 

খাগড়াছড়িতে গৃহবধূকে ‘ধর্ষণ’ চেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১

কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী এনিয়ে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “যারা এই অবধি আমার খোঁজ খবর নিয়েছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সেইফলি বাসায় আসছি। যারা জিজ্ঞেস করছেন, আমি কিছু করতে পেরেছি কি না তাদের জন্য বলি ‘না’। আমি তেমন কিছু করতে পারিনি!”

তিনি আরও লেখেন, “যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন, আমি ভীতু অনেক। অল্পতে ভয় পাই। ওই ঘটনার পর আমার হাত-পা কাঁপছিল। গা ঘিনঘিন করছিল। দুটো গালি দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারিনি। এই যে সঠিক জায়গায় সঠিক প্রতিবাদ না করতে পারার কষ্ট আমি আজীবন ধরে পেয়ে আসছি। ওই লোকের খোঁজ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নেব।”

ফেসবুক আইডির তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগী তরুণী রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে তার পোস্ট দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমরা ভিডিওটি দেখেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও দেখেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা আছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুতই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ওই ছ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের