রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে রাজি ইউক্রেন
Published: 12th, March 2025 GMT
সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের মধ্যে বৈঠকের পর কিয়েভ বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে তাৎক্ষণিক ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নিতে প্রস্তুত তারা। খবর বিবিসির।
গত মাসে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর সৌদি আরবের জেদ্দায় গতকাল (১১ মার্চ) অনুষ্ঠিত এই আলোচনা ছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
বৈঠকে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বল এখন (রাশিয়ানদের) কোর্টে।’ এখন মস্কোর কাছে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরো পড়ুন:
ঢাকার রাশিয়ান হাউজে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন
রাশিয়ায় ব্যাপক ড্রোন হামলা ইউক্রেনের
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এখন রাশিয়াকে ‘ইতিবাচক’ এই প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর দায়িত্ব নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং নিরাপত্তা সহায়তা পুনরায় চালু করবে। সম্প্রতি ইউক্রেনের ওপর সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পর গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহও বন্ধ করে দেয় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয় প্রতিনিধিদল তাদের আলোচক দলের নাম ঘোষণা করতে এবং ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এমন একটি স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, রাশিয়ানরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে বলে তিনি আশা করছেন। তবে তারা যদি এতে রাজি না হয় তবে ‘দুর্ভাগ্যবশত সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কী প্রতিবন্ধকতা আছে, তা আমরা বুঝতে পারব’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এদিকে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “ইউক্রেন এতে (যুদ্ধবিরতি) রাজি হয়েছে। আশা করি প্রেসিডেন্ট পুতিনও রাজি হবেন।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যেদিন শেষবার হোয়াইট হাউজে উপস্থিত ছিলেন, সেদিনের তুলনায় বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন।”
জেদ্দায় ‘গঠনমূলক’ আলোচনার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
একটি ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়াকে এবার ‘যুদ্ধ বন্ধ করতে বা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে তার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে’।”
তিনি আরো বলেন, “পূর্ণ সত্য প্রকাশের সময় এসেছে।”
মস্কো এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মঙ্গলবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে ব্রিফ করার পর তারা একটি বিবৃতি জারি করবে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। মস্কো বর্তমানে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের জানান, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা যেমন বলেছে, ঠিক তেমনই দুটি চুক্তি করতে হবে।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি আশা করছেন যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাশিয়া চুক্তিতে সম্মত হবে।
“আগামীকাল রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের একটি বড় বৈঠক হবে এবং আশা করা যায় কিছু দুর্দান্ত আলোচনা হবে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ওয়াশিংটনে ফের আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র প র স ড ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।