ভারতে আসছে ইলন মাস্কের স্টারলিংক, এয়ারটেলের সঙ্গে চুক্তি
Published: 12th, March 2025 GMT
এবার ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতে চালু হতে যাচ্ছে। এয়ারটেলের সঙ্গে স্পেসএক্সের এ বিষয়ে একটি চুক্তিও হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটর কোম্পানি এয়ারটেলের অবকাঠামোর মাধ্যমে স্টারলিংকের উচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবা পাবেন ভারতীয় গ্রাহকেরা।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও দেশে স্টারলিংকের ব্যবসা নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন।
সংবাদে বলা হয়েছে, স্পেসএক্সের সঙ্গে এয়ারটেলের চুক্তি অনুযায়ী, স্টারলিংকের ইন্টারনেট–সেবার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এয়ারটেলের নির্ধারিত বিক্রয়কেন্দ্রে পাওয়া যাবে। এয়ারটেলই দেবে স্টারলিংকের সংযোগ। ডিজিটালমাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে যৌথভাবে কাজ করবে এয়ারটেল ও স্টারলিংক। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গ্রামীণ এলাকার বিদ্যালয়, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেবে তারা।
এয়ারটেল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার জানায়, ভারতে এয়ারটেল গ্রাহকদের স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবার সুযোগ দেওয়ার জন্য স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের দাবি, এর ফলে আগামী প্রজন্মের কাছে উন্নত মানের ইন্টারনেট পরিষেবা অনেক দ্রুত ও সহজে পৌঁছানো যাবে। এর মাধ্যমে দুর্গম এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে উচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া যাবে। পাশাপাশি খরচও কিছুটা কমবে। স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট গেয়ান্নে শটওয়েল বলেন, ‘এয়ারটেলের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি। ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবার রূপান্তর ঘটাব আমরা।’
স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট বিভাগ স্টারলিংকের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে উচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট–সেবা বেশ জনপ্রিয়। এবার ভারতেও সেই পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ চওড়া হলো এয়ারটেলের উদ্যোগে। এ বিষয়ে স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘এয়ারটেলের সঙ্গে কাজের জন্য আমরা মুখিয়ে রয়েছি। ভারতবাসীর ইন্টারনেট ব্যবহারে বড় পরিবর্তন আনবে স্টারলিংক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প সএক স র
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে
তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা।
নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।
বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।
ঢাকা/শংকর/রফিক