খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে কারাবন্দি খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও কেসিসির ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর খালিদ আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। 

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে বৈঠকের বিষয়টি সাংবাদিকদের চোখে পড়ে। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের ছবি তুলতে গেলে তারা খুলনার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম খুলনা গেজেটের দুই সাংবাদিককে নাজেহাল করে। পরে অন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের সামনেই গাড়িতে করে চলে যান। 

গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর খালিশপুর থানার পদ্মা অয়েল রোডে খালিদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় খালিদ একতলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন তার ডান পা ভেঙে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়।

আজ দুপুরে প্রিজন সেলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এনাম মুন্সী, খালিদের চাচা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ ফরহাদ হোসেন প্রিজন সেলের ভেতরে খালিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। প্রিজন সেলের মূল ফটকে তালা ঝোলানো। বাইরের গেটে পাহারা দিচ্ছেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মী মনিরুল ও ডিম সোহেল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনাম মুন্সীর বিরুদ্ধে আড়ংঘাটা থানায় একটি এবং খালিশপুর থানায় বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে। ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪টি। 

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক তানভীর আহমেদ বলেন, তালা দেওয়া প্রধান ফটকের সামনে যুবকের জটলা দেখে আমরা এগিয়ে গেলে, তালা খুলে এনাম মুন্সী ও ফরহাদ বের হয়ে আসেন। ভিডিও করার সময় উপস্থিত কর্মীরা আমাদের নাজেহাল করার চেষ্টা করেন। 

প্রিজন সেলের ভেতরে এক আসামির সঙ্গে অন্য আসামিদের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সেলের ইনচার্জ এসআই শামীম হোসেন বলেন, ‘আমি পুলিশ লাইনসে একটি কাজে গিয়েছিলাম। রেজাউল নামে এক কনস্টেবল দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার আজম খান বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ক র বন দ প র জন স ল র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ