মাদ্রিদের ওয়ান্দা মেত্রোপোলিতায়নোয় কি বুধবার রাতে অলৌকিক কোনো কিছুর উপস্থিত ছিল? অদ্ভুতুড়ে কিছু? না, মানে যেভাবে এদিন ভিনির মতো পোড় খাওয়া কেউ গোলপোস্টের অতটা ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে পেনাল্টি মিস করলেন, যেভাবে আলভারেজের মতো কেউ পিছলে পড়ে ‘ডাবল টাচ’-এর কলঙ্ক মাথায় নিলেন, তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা না পেয়ে এমনটা মনে হতেই পারে!
তবে ঘটন-অঘটন যেটাই হোক না কেন, নিয়তি পরিষ্কার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ, সেখানে প্রতিপক্ষ যতই গর্জে উঠুক না কেন, ম্যাচে যতই নাটকীয়তা থাক না কেন, ম্যাচের শেষ সেকেন্ড আগে হলেও জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লা ব্ল্যাঙ্কোসরা। হয়েছেও তাই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে নির্ধারিত সময়ে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। কিন্তু দুই লেগ মিলিয়ে অগ্রগামিতায় ২-২ গোলের সমতা ছিল। তাই কোয়ার্টারে যাওয়ার জন্য গোলপোস্টের নিচে ‘পেনাল্টির লটারি’!
আর সেখানেই ৪-২ গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে দেয়। কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ এবার ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল। তবে এই ম্যাচে ‘ডাবল টাচের’ বিতর্কে মাদ্রিদ এখন দ্বিখণ্ডিত। অ্যাতলেটিকোর সমর্থকরা সাদা চোখে বলে আলভারেজের দুবারে পা স্পর্শ দেখেননি বলে ক্ষু্ব্ধ। আর রিয়াল সমর্থকরা ভিএআর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে খুশি পরের রাউন্ডে উঠে যাওয়ায়।
একই শহরের দুটি ক্লাব। পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগাগোড়াই ছিল। প্রথম লেগের ম্যাচে অ্যাতলেটিকোকে আতিথেয়তা দিয়ে ২-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার ছিল অ্যাতেলেটিকোর মাঠে গিয়ে আতিথেয়তা নেওয়ার। সেখানে ম্যাচের ২৭ সেকেন্ডের মাথায় গ্রিজম্যানের বুদ্ধিমান একটি পাসে গোল করেন কনর গ্যালাঘার। ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা এমবাপ্পেরা এরপর প্রতিআক্রমণে ব্যস্ত করে রাখেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্স। একটা সুযোগও এসেছিল ৬৮ মিনিটে। ফাউল আদায় করা এমবাপ্পে নিজে পেনাল্টি না নিয়ে ভিনির কাছে বল এগিয়ে দেন। অবিশ্বাস্যভাবে সেটা মিস করেন ভিনি। এরপর আলভারেজরাও ধার বাড়িয়েছিলেন আক্রমণে। কিন্তু গোলের মুখ দেখা হয়নি কোনো দলেরই। আর তারপর টাইব্রেকে নাটকের চূড়ান্ত স্ক্রিপ্ট ধরা দেয়।
রিয়ালের হয়ে একে একে গোল করেন এমবাপ্পে, বেলিংহাম, ভালভার্দে আর রুডিগার। অ্যাতলেটিকোর হয়ে গোল বাতিল হয়ে যায় আলভারেজের। কিক নিতে গিয়ে পিছলে পড়ে যান তিনি, তবে এর আগেই তাঁর ডান পায়ের শট রিয়ালের জালে জড়িয়ে যায়। কিন্তু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এমবাপ্পের কেন জানি সন্দেহ হয়। তিনি গিয়ে ফোর্থ অফিসিয়ালের কাছ ভিএআর দেখার অনুরোধ করেন। রিয়ালের গোলরক্ষক কর্তুয়ারও মনে হয়– আলভারেজের কিক নেওয়া পায়ের আগে বলটি দাঁড়িয়ে থাকা পায়েও স্পর্শ হয়েছে। ভিএআর দেখে পোলিশ রেফারি গোলটি বাতিল করেন। তারপরও একটা সুযোগ ছিল যখন রিয়ালের হয়ে গোলটি মিস করেন লুকাস ভাসকেজ। কিন্তু অ্যাতলেটিকোর হয়ে ইয়োরেন্তেও গোল করতে না পারলে ভেঙে পড়ে পুরো দল।
হতাশ থেকে প্রচণ্ড ক্ষোভ জন্ম নেয় অ্যাতলেটিকোর আর্জেন্টাইন কোচ সিমিওনির। ম্যাচের পর তিনি তেড়েফুড়ে যান অফিসিয়ালদের দিকে। সংবাদ সম্মেলনেও ক্ষোভ চাপা রাখতে পারেননি। ‘ফুটেজ দেখিছি আমি। রেফারি বলছেন, হুলিয়ান বলে স্পর্শ করেন সাপোর্টিং পা দিয়েও। কিন্তু আমি তো দেখেছি, বল নড়েনি। গোল হয়েছে কী হয়নি, এটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে। পেনাল্টি শুটআউটে ভিএআর রিভিউ আমি কখনও দেখিনি। আপনারা কেউ দেখেছেন কি? দেখে থাকলে হাত তুলুন…। কাউকে হাত তুলতে দেখছি না, আমার আর এ ব্যাপারে বলার কিছু নেই।’ ডাবল টাচ নিয়ে রিয়াল কোচ আনচেলেত্তি অবশ্য কোনো বিতর্কে যেতে চান না। ‘শুরুতে আমি বুঝতে পারিনি। পরে আমি ভিডিও দেখেছি এবং মনে হয়েছে, সে দুইবার বলে স্পর্শ করেছে। তার বাম পা লেগেছে বলে।’ ইস্যুটি এখানেই চাপা দিতে চান তিনি।
কোয়ার্টার ফাইনালের লাইনআপ
রিয়াল মাদ্রিদ – আর্সেনাল
বার্সেলোনা– বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড
বায়ার্ন মিউনিখ – ইন্টার মিলান
পিএসজি – অ্যাস্টন ভিলা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলভ র জ র এমব প প স পর শ ভ এআর
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।