Samakal:
2025-09-18@04:57:27 GMT

টাইব্রেকে দ্বিখণ্ডিত মাদ্রিদ

Published: 14th, March 2025 GMT

টাইব্রেকে দ্বিখণ্ডিত মাদ্রিদ

মাদ্রিদের ওয়ান্দা মেত্রোপোলিতায়নোয় কি বুধবার রাতে অলৌকিক কোনো কিছুর উপস্থিত ছিল? অদ্ভুতুড়ে কিছু? না, মানে যেভাবে এদিন ভিনির মতো পোড় খাওয়া কেউ  গোলপোস্টের অতটা ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে পেনাল্টি মিস করলেন, যেভাবে আলভারেজের মতো কেউ পিছলে পড়ে ‘ডাবল টাচ’-এর কলঙ্ক মাথায় নিলেন, তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা না পেয়ে এমনটা মনে হতেই পারে! 

তবে ঘটন-অঘটন যেটাই হোক না কেন, নিয়তি পরিষ্কার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ, সেখানে প্রতিপক্ষ যতই গর্জে উঠুক না কেন, ম্যাচে যতই নাটকীয়তা থাক না কেন, ম্যাচের শেষ সেকেন্ড আগে হলেও জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লা ব্ল্যাঙ্কোসরা। হয়েছেও তাই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে নির্ধারিত সময়ে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। কিন্তু দুই লেগ মিলিয়ে অগ্রগামিতায় ২-২ গোলের সমতা ছিল। তাই কোয়ার্টারে যাওয়ার জন্য গোলপোস্টের নিচে ‘পেনাল্টির লটারি’! 

আর সেখানেই ৪-২ গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে দেয়। কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ এবার ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল। তবে এই ম্যাচে ‘ডাবল টাচের’ বিতর্কে মাদ্রিদ এখন দ্বিখণ্ডিত। অ্যাতলেটিকোর সমর্থকরা সাদা চোখে বলে আলভারেজের দুবারে পা স্পর্শ দেখেননি বলে ক্ষু্ব্ধ। আর রিয়াল সমর্থকরা ভিএআর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে খুশি পরের রাউন্ডে উঠে যাওয়ায়।

একই শহরের দুটি ক্লাব। পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগাগোড়াই ছিল। প্রথম লেগের ম্যাচে অ্যাতলেটিকোকে আতিথেয়তা দিয়ে ২-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার ছিল অ্যাতেলেটিকোর মাঠে গিয়ে আতিথেয়তা নেওয়ার। সেখানে ম্যাচের ২৭ সেকেন্ডের মাথায় গ্রিজম্যানের বুদ্ধিমান একটি পাসে গোল করেন কনর গ্যালাঘার। ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা এমবাপ্পেরা এরপর প্রতিআক্রমণে ব্যস্ত করে রাখেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্স। একটা সুযোগও এসেছিল ৬৮ মিনিটে। ফাউল আদায় করা এমবাপ্পে নিজে পেনাল্টি না নিয়ে ভিনির কাছে বল এগিয়ে দেন। অবিশ্বাস্যভাবে সেটা মিস করেন ভিনি। এরপর আলভারেজরাও ধার বাড়িয়েছিলেন আক্রমণে। কিন্তু গোলের মুখ দেখা হয়নি কোনো দলেরই। আর তারপর টাইব্রেকে নাটকের চূড়ান্ত স্ক্রিপ্ট ধরা দেয়। 

রিয়ালের হয়ে একে একে গোল করেন  এমবাপ্পে, বেলিংহাম, ভালভার্দে আর রুডিগার। অ্যাতলেটিকোর হয়ে গোল বাতিল হয়ে যায় আলভারেজের। কিক নিতে গিয়ে পিছলে পড়ে যান তিনি, তবে এর আগেই তাঁর ডান পায়ের শট রিয়ালের জালে জড়িয়ে যায়। কিন্তু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এমবাপ্পের কেন জানি সন্দেহ হয়। তিনি গিয়ে ফোর্থ অফিসিয়ালের কাছ ভিএআর দেখার অনুরোধ করেন। রিয়ালের গোলরক্ষক কর্তুয়ারও মনে হয়– আলভারেজের কিক নেওয়া পায়ের আগে বলটি দাঁড়িয়ে থাকা পায়েও স্পর্শ হয়েছে। ভিএআর দেখে পোলিশ রেফারি গোলটি বাতিল করেন। তারপরও একটা সুযোগ ছিল যখন রিয়ালের হয়ে গোলটি মিস করেন লুকাস ভাসকেজ। কিন্তু অ্যাতলেটিকোর হয়ে ইয়োরেন্তেও গোল করতে না পারলে ভেঙে পড়ে পুরো দল।

হতাশ থেকে প্রচণ্ড ক্ষোভ জন্ম নেয় অ্যাতলেটিকোর আর্জেন্টাইন কোচ সিমিওনির। ম্যাচের পর তিনি তেড়েফুড়ে যান অফিসিয়ালদের দিকে। সংবাদ সম্মেলনেও ক্ষোভ চাপা রাখতে পারেননি। ‘ফুটেজ দেখিছি আমি। রেফারি বলছেন, হুলিয়ান বলে স্পর্শ করেন সাপোর্টিং পা দিয়েও। কিন্তু আমি তো দেখেছি, বল নড়েনি। গোল হয়েছে কী হয়নি, এটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে। পেনাল্টি শুটআউটে ভিএআর রিভিউ আমি কখনও দেখিনি। আপনারা কেউ দেখেছেন কি? দেখে থাকলে হাত তুলুন…। কাউকে হাত তুলতে দেখছি না, আমার আর এ ব্যাপারে বলার কিছু নেই।’ ডাবল টাচ নিয়ে রিয়াল কোচ আনচেলেত্তি অবশ্য কোনো বিতর্কে যেতে চান না। ‘শুরুতে আমি বুঝতে পারিনি। পরে আমি ভিডিও দেখেছি এবং মনে হয়েছে, সে দুইবার বলে স্পর্শ করেছে। তার বাম পা লেগেছে বলে।’ ইস্যুটি এখানেই চাপা দিতে চান তিনি।

কোয়ার্টার ফাইনালের লাইনআপ
রিয়াল মাদ্রিদ – আর্সেনাল
বার্সেলোনা– বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড
বায়ার্ন মিউনিখ – ইন্টার মিলান
পিএসজি – অ্যাস্টন ভিলা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলভ র জ র এমব প প স পর শ ভ এআর

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল

বাঁশির সঙ্গে সখ্য সেই শৈশবে। গ্রামে যাত্রাপালায় গান করতেন আর বাঁশির সুরে ছড়াতেন মুগ্ধতা। জীবন-জীবিকার তাগিদে একসময় বেছে নেন রিকশাচালকের পেশা। গ্রাম ছেড়ে থিতু হন ব্যস্ত শহরে। তবে বাঁশের বাঁশিকে হাতছাড়া করেননি শফিকুল ইসলাম (৪৫)।

যানজটে গতি থামতেই রিকশার হ্যান্ডেল ছেড়ে শফিকুল কোমর থেকে হাতে নেন প্রিয় বাঁশি। হর্নের কর্কশ ধ্বনি এড়িয়ে তখন বাতাসে ভাসে সুরের মূর্ছনা। বেখেয়ালি যাত্রী আর পথচারীরা হঠাৎ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকেন বাঁশিওয়ালার দিকে।

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বাঁশির সঙ্গে মিতালি গড়েছেন শফিকুল। সেই বাঁশির সুরেই যেন তাঁর জীবন বাঁধা। অভাব, দুর্দশা আর দারিদ্র্যও এ বন্ধন থেকে তাঁকে আলাদা করতে পারেনি। রিকশার প্যাডেলের ছন্দে তাঁর ঠোঁটে বিমূর্ত হয়ে বাঁশির করুণ সুর। বগুড়া শহরের পথচারীদের কাছে তিনি ‘বাঁশিওয়ালা রিকশাওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত।

শফিকুলের পৈতৃক ভিটা বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শালিখা গ্রামে। তবে জীবিকার তাগিদে থাকেন বগুড়া শহরের মালতীনগর এলাকার একটি গ্যারেজে। গত রোববার বিকেলে তাঁর দেখা মেলে বগুড়া শহরের কোর্ট হাউস স্ট্রিটের ব্যস্ত সড়কে। শেষ বিকেলে যানজটে যখন পথচারীরা বিরক্ত, তখন বাতাসে ভেসে আসে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’ ভাওয়াইয়া গানটির সুর।

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বাঁশির সঙ্গে মিতালি গড়েছেন শফিকুল। রিকশার প্যাডেলের ছন্দে তাঁর ঠোঁটে বিমূর্ত হয়ে বাঁশির করুণ সুর। বগুড়া শহরের পথচারীদের কাছে তিনি ‘বাঁশিওয়ালা রিকশাওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত।

এরই একফাঁকে আলাপ হয় শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। কথায় কথায় তিনি জানান, দারিদ্র্যের কারণে পঞ্চম শ্রেণির গণ্ডি পেরোতে না পেরোতেই পড়ালেখা বন্ধ করতে হয়। এরপর জড়িয়ে পড়েন গ্রামের একটি যাত্রাপালার দলে। ‘কাজলরেখা’, ‘সাগরভাসা’, ‘গুনাইবিবি’, ‘রাখালবন্ধু’, ‘রূপবান’সহ নানা লোককাহিনিনির্ভর যাত্রাপালায় অভিনয় ও গান করেছেন। শুধু তা–ই নয়, গানের সুরে হারমোনিয়ামও বাজাতেন। এসবের ফাঁকে ফাঁকে টুকটাক রিকশা চালাতেন তখন।

পরিবারের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, ২০০০ সালে বিয়ে করেন। স্ত্রী মোর্শেদা গৃহিণী। তাঁদের তিন মেয়ে—শরীফা, শম্পা ও শাকিলা। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী ও দুই মেয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। মাসে দুবার তিনি বাড়িতে যান। শফিকুলের দাবি, বগুড়া শহরে রিকশা চালিয়ে দিনে পান ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। থাকা-খাওয়া ও রিকশার জমা খরচ ছাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থেকে যায়। সেই টাকায় চলে সংসার।

শুরুতে শহুরে জীবন শফিকুলের একদম ভালো লাগত না, মন পড়ে থাকত সেই গ্রামে। মন ভালো রাখতে রিকশা চালানোর সময় গুনগুন করে গাইতেন। এর মধ্যে শহরের রাস্তায় একদিন এক বাঁশিওয়ালার সঙ্গে তাঁর দেখা। তাঁর কাছ থেকে উপার্জনের ৮০ টাকা দিয়ে একটি বাঁশি কেনেন তিনি। এরপর রাতে গ্যারেজে শুয়ে সেই বাঁশিতে সুর তোলেন। এখন বাঁশি তাঁর নিত্যসঙ্গী।

বাঁশি বাজাতে বাজাতে রিকশা চালানো অভ্যাস হয়ে গেছে জানিয়ে শফিকুল বলেন, যানজটে আটকা পড়লে বাঁশিতে সুর তোলেন। যাত্রী না পেলে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে একমনে বাঁশি বাজান। সুর শুনে যাত্রীরা ১০-২০ টাকা বেশি ভাড়া দেন কখনো কখনো।

গরিব হওয়ার কারণে মেয়ের পরিবারের লোকজন প্রেমে বাধা হয়। বড়লোকের ছলের লগে বিয়ে হয় মেয়েটার। সেই থাকে গান আর সুর সঙ্গী।শফিকুল ইসলাম

স্মৃতি হাতড়ে শফিকুল বলেন, একবার ঢাকায় রিকশা চালাতে গিয়েছিলেন। দৈনিক বাংলার মোড়ে রিকশা থামিয়ে একমনে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি ২০ তলা ভবন থেকে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির চিৎকার শুনতে পান। ওপরে তাকাতেই ৫০ টাকার একটা নোট নিচে ফেলে দেন ওই ব্যক্তি। প্রশংসা করেন বাঁশির সুরের।

আলাপচারিতা একসময় আনমনে হয়ে পড়েন শফিকুল। বলেন, ‘মন তো (মনে) না পাওয়ার কষ্ট আচে। ১৬ বছর বয়সে এলাকার এক মেয়ের প্রেমে পড়চিনু। ৬ মাস ভালোই চলিচ্চিল সেই প্রেম। গরিব হওয়ার কারণে মেয়ের পরিবারের লোকজন প্রেমে বাধা হয়। বড়লোকের ছলের লগে বিয়ে হয় মেয়েটার। সেই থাকে গান আর সুর সঙ্গী। আরও পরে সঙ্গী হয় বাঁশি। এহন বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলে থাকপার চেষ্টা করি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের থ্রো লাগল আম্পায়ারের মাথায়, এরপর যা হলো
  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার