মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনার’ জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেছেন। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) ট্রাম্পের এই অনুরোধের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কুরস্ক অঞ্চলে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

পুতিন বলেছেন, “কিয়েভ যদি কুরস্ক অঞ্চলে থাকা সেনাদের আত্মসমপর্ণের নিদের্শ দেয়, তাহলে রাশিয়া তাদের জীবন রক্ষা করবে।”

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে: ইউক্রেন

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরিকল্পনা জমা দেবে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থান ‘শক্তিশালী’ দাবি করে আসলেও, শুক্রবার তিনি ওই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ বলে বর্ণনা করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে হাজার হাজার ইউক্রেনীয়দের জীবন রক্ষা করতে বলেছেন। যারা ‘সম্পূর্ণরূপে ঘেরা’ এবং ‘দুর্বল’ বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করেছি যে, তাদের জীবন রক্ষা করা হোক। এটি একটি ভয়াবহ গণহত্যা হবে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেখা যায়নি।” 

শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন তার নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের আবেদন পড়েছেন এবং মানবিক বিবেচনা বিবেচনায় নেওয়ার জন্য ট্রাম্পের আহ্বান বুঝতে পেরেছেন।

পুতিন বলেন, “এই প্রসঙ্গে, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে যদি (ইউক্রেনীয় সেনারা) অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইন এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের আইন অনুসারে তাদের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে এবং তাদের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা হবে।” 

রুশ প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্টের আবেদন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, ইউক্রেনের সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে তার সামরিক ইউনিটগুলোকে অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণের জন্য একটি অনুরূপ আদেশ প্রয়োজন।”

ইউক্রেন গত বছরের আগস্টে সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার কুরস্কে অভিযান শুরু করে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ায় কোনো বিদেশি সেনাবাহিনীর এটিই সবচেয়ে বড় অভিযান। তাই মস্কোও পাল্টা কঠোর জবাব দিতে শুরু করে। 

কুরস্কে রাশিয়ার পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনের দখল করা বেশির ভাগ অঞ্চল সাম্প্রতিক সময়ে পুনরুদ্ধার করে নিয়েছেন পুতিনের সেনারা। আর এ বিষয়টি সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মস্কোর ওপর কিয়েভের দর-কষাকষির সুযোগ কেড়ে নিয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের পরই পুতিনকে ‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনার’ জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেন ট্রাম্প। 

ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে আলোচনাকে ‘খুব ভালো এবং ফলপ্রসূ’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, “এই ভয়াবহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ অবশেষে শেষ হওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।”

ইউক্রেন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তবে পুতিন মার্কিন প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এর মধ্যে আরো কিছু বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পের বিশেষ দূতের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সম্পর্কে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে আলাপ হবে। তবে কবে এই আলাপ হবে তা জানানো হয়নি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ দ র জ বন র ইউক র ন র ইউক র ন য র ইউক র ন ইউক র ন য় শ ক রব র ধ র পর বল ছ ন অন র ধ

এছাড়াও পড়ুন:

তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ

স্বাধীনতাযুদ্ধকে যখন শুধু আওয়ামী লীগিকরণ করা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ সেটার বিরোধিতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। উনি পুরো জাতির। তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক।

আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শারমিন আহমদ। সেখানেই তিনি এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে কথা বলেন শারমিন আহমদ। তিনটি শর্তের ওপর ভিত্তি করে এই চুক্তি হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, স্বীকৃতি বাদে বন্ধুত্ব হয় না। সেই স্বীকৃতি হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ ভারতীয় সেনাবহিনীর একক কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘না, এটি যৌথ কমান্ডের ভিত্তিতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’

আরও পড়ুনজন্মদিনে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ২৮ জুলাই ২০২৫

শারমিন আহমদ বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিরোধ না করলে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে লেখা থাকত ভারতের কাছে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যখনই মনে করবে, তখনই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, এটিই ছিল তৃতীয় শর্ত বলে জানান শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই শর্তের ভিত্তিতেই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তনের জন্য বলেন।

আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ: রোজনামচার মানুষটিকে বোঝা২৩ জুলাই ২০২৫

অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করে শারমিন আহমদ বলেন, এসব ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই ভারতীয়রা এ দেশ স্বাধীন করেছে, এমন বয়ান তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এটা খুব লজ্জার ব্যাপার। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কেননা, গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস সংরক্ষণ না করা হলে জাতি আরও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারক বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তাঁর বর্ক্তৃতার শিরোণাম ছিল ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : ঐতিহাসিকতা ও রাজনৈতিকতা।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ
  • মাদকাসক্ত ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা, থানায় আত্মসমর্পণ বাবা-মায়ের
  • ‘মাদকাসক্ত’ ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ মা-বাবার
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার