মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার কথা ভাবছেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হবে। মস্কোতে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হওয়ার পর এসব কথা বলেছেন তিনি।

ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটন এলাকায় ফেরার সময় এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলব। সপ্তাহান্তে প্রচুর কাজ হয়েছে।’

ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এ যুদ্ধের অবসান করা যায় কি না, তা আমরা দেখতে চাই। হয়তো আমরা পারব, হয়তো আমরা পারব না। তবে আমি মনে করি, আমাদের ভালো সুযোগ আছে।’

ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য পুতিনকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে ইউক্রেন প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। সপ্তাহান্তে রাশিয়া ও ইউক্রেন দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাশিয়ার কুরস্কতে কয়েক মাস ধরে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রাশিয়া।

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোন কোন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে, তা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন: ‘আমরা ভূমি নিয়ে কথা বলব। আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কথা বলব। আমি মনে করি, ইতিমধ্যেই এসবের অনেকগুলো নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট কিছু সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলছি।’

ট্রাম্প বলেছেন, সপ্তাহান্তে এ বিষয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে। ওই সময় ফ্লোরিডায় ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তাঁর একটি বাসভবন আছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে তিনি ওয়াশিংটনের কাছে জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন এবং হোয়াইট হাউসে ফেরেন।

ট্রাম্প মার্কিননীতি থেকে সরে এসে মস্কোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করা বেশি কঠিন। গত মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্প একটি উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠক করেছেন। সেদিন পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই ইউক্রেনীয় নেতা হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে যান।

তবে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেনের সম্মতি দেওয়ায় এখন ট্রাম্পের দাবি মেনে নেওয়া না নেওয়ার বিষয়টি রাশিয়ার ওপর নির্ভর করছে। আর তা তিন বছর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু করা পুতিনের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে পরীক্ষায় ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ইউক র ন য বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ