যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন ইউক্রেন শান্তিচুক্তির বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এরই মধ্যে ‘অনেক বিষয়ে’ একমত হয়েছেন। শান্তিচুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার এই দুই নেতার বহুল প্রত্যাশিত ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প এ কথা জানান। 

নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় আজ সকালে তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন। খবর: বিবিসির

ট্রাম্প লিখেছেন, প্রতি সপ্তাহে উভয় পক্ষের আড়াই হাজার সেনাসদস্যের মৃত্যু হচ্ছে। এটি এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।

এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন একটি শান্তিচুক্তি করা যায়। যুদ্ধবিরতি ও একটি শান্তিচুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি।

এদিকে পুতিন যে শান্তিচুক্তিতে আগ্রহী, সে বিষয়ে তাকে প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।  

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাহসের প্রশংসা করেছেন। একই ধরনের কাজ করতে তিনি পুতিনের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মাখোঁ লিখেছেন, অনেক মৃত্যু হয়েছে। অনেক জীবন ধ্বংস হয়েছে। অনেক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। বন্দুকের শব্দ অবশ্যই থামাতে হবে।

যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সামনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পুতিনকে এখন পূর্ণাঙ্গ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে। শান্তিচুক্তি নিয়ে পুতিনের মধ্যে আন্তরিকতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপের আগমুহূর্তে বেশ উৎসাহব্যঞ্জক বার্তা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় শান্তিচুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে ট্রাম্প ‘দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ