পাবনায় হাসপাতালে ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য বিনা পয়সায় সাহ্রি
Published: 19th, March 2025 GMT
সালেহা বেগমের (৪৫) বাড়ি পাবনার চাটমোহরে। শিশুসন্তানকে নিয়ে কয়েক দিন ধরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আছেন। কোনো দিন সঙ্গে থাকছেন স্বামী, কোনো দিন বোন। রোজা রাখার জন্য সাহ্রি কোথায় করবেন, তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন।
আলম মুন্সি শহরের রায়বাহাদুর গেট এলাকায় রাতের বাজারে মাছ বিক্রি করেন। তিনিও রোজা রাখেন। কিন্তু প্রতিদিন মাছের দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সাহ্রির সময় শেষ হয়ে যায়। ফলে তাঁকেও সাহ্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
এমন মানুষদের জন্য বিনা মূল্যে সাহ্রির আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশন’। স্কয়ার গ্রুপ প্রতি রাতে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাঁদের স্বজনদের জন্য ৬০০ প্যাকেট এবং শহরের ছিন্নমূল মানুষের জন্য তহুরা–আজিজ ফাউন্ডেশন ৩০০ প্যাকেট সাহ্রি সরবরাহ করছে।
আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি অধিকাংশ রোগী জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসেন। পবিত্র রমজান মাসে রাতে তাঁদের জন্য সাহ্রির আয়োজন করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। বিষয়টি বিবেচনা করে ২০২৩ সাল থেকে স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর নির্দেশনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাঁদের স্বজনদের জন্য স্কয়ার গ্রুপ সাহ্রির আয়োজন শুরু করে। স্কয়ারের কর্মীরা দিনের কাজ শেষ স্ব–উদ্যোগে সাহ্রির আয়োজন করেন। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার রান্না ও প্যাকেটজাত শেষে নিজেরাই হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাঁদের স্বজনদের হাতে পৌঁছে দেন। খাবার তালিকায় থাকে সাদা ভাত, সবজি এবং দিনভেদে খাসির মাংস, মুরগির মাংস, মাছ ও ডিমের যেকোনো একটি।
রাতের শ্রমিক ও ছিন্নমূল মানুষদের হাতে সাহ্রি তুলে দিচ্ছেন তহুরা আজিজ ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। গত বুধবার রাতে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা