অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কঠোর অবস্থানে : সিএমপি কমিশনার
Published: 20th, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬টি থানা এলাকায় চলমান বিশেষ অভিযানের আওতায় ৩ শতাধিক আসামি গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঈদকে সামনে রেখে নগরবাসীর নির্বিঘ্নে কেনাকাটা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চুরি ছিনতাই রোধে পুলিশি টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ।
সিএমপির জনসংযোগ বিভাগের সাব ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ ইমরান জানান, নগরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সিএমপির বিশেষ অভিযান চালমান আছে। অভিযানের আওতায় গত এক সপ্তাহে মহানগরীর ১৬টি থানা এলাকা থেকে ৩ শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবে শহীদ জসিমের মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ১
রাঙামাটিতে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় গ্রেপ্তার ১
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ আভিযানিক দল ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে অভিযান চালিয়ে গত ১৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ প্রকাশ ছোট সাজ্জাদকে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগরকে অপরাধমুক্ত রাখতে পুলিশ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থেকে অভিযান পরিচালনা করছে। ঈদকে সামনে রেখে নগরবাসীর নির্বিঘ্ন কেনাকাটা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চুরি ছিনতাই রোধে পুলিশি টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট.
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর স এমপ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।